নব্যেন্দু হাজরা: নেই প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্লাসরুম, নেই উপযুক্ত প্রশিক্ষক, নেই প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দিষ্ট গাড়ি, নেই নির্দিষ্ট ঠিকানায় কোনও অফিসও। অথচ কিছু না থেকেও ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়া শহরজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে মোটর ট্রেনিং স্কুল (Moto Training School)। এমনকী জাল বিল ছাপিয়েও চলছে গাড়ি চালানো শেখানো। যা থেকে বাড়ছে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। কাঁচা হাতে স্টিয়ারিং ধরাতে বাড়ছে বিপদও। ইতিমধ্যে গোটা বিষয়টি নজরে এসেছে পরিবহণ দপ্তরের । জাল প্রশিক্ষক ধরতে চালানো হচ্ছে অভিযানও।
গত মঙ্গলবারের কথা। বাইপাস (EM Bypass) ধরে সায়েন্স সিটির দিকে আসছিল ডাব্লুবি২০এইচ৬৩০৬ গাড়িটি। গাড়ির সামনে লেখা ‘এল’। পিছনে ব্যানার ঝুলছে মোটর ট্রেনিং স্কুলের। যা দেখে কসবার কাছে সন্দেহ হয় মোটর ভেহিক্যালস ইন্সপেক্টরদের। গাড়ি দাঁড় করাতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। জানা যায়, যে মহিলা চালকের আসনে, তিনি গাড়ি চালানো শিখছেন। তাঁর পাশে বসে থাকা ব্যক্তি প্রশিক্ষক। যদিও প্রশিক্ষকের কোনও বৈধ মোটর ট্রেনিং স্কুল নেই। অফিস নেই। গাড়িটির সিএফ ফেল হয়ে গিয়েছে বছর পাঁচেক আগে। ডবল ব্রেক, ডবল ক্লাচ দেওয়া গাড়িও সেটি নয়। যে মহিলা বাইপাস ধরে গাড়ি চালাচ্ছেন, তাঁর কাছেও কোনও লাইসেন্স নেই। অর্থাৎ পুরোটাই বেআইনি। এরপরই গাড়িটিকে আটক করেন পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকরা। গাড়ি থেকে মিলেছে বেশ কয়েকটি মোটর ট্রেনিং স্কুলের বিল। আর তাতেই লুকিয়ে সরষের মধ্যে ভূত।
[আরও পড়ুন: FIR খারিজের আরজি নিয়ে এবার কলকাতা হাই কোর্টে রোদ্দুর রায়]
জানা যায়, ছ’হাজার টাকায় শেখানো হয় চার চাকা চালানো। সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্সও (Driving Licence) করে দেওয়া হয়। আর দু’চাকার ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকা। পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন অভিযান চালাতে দেখা যাচ্ছে, শহর-শহরতলিতে গজিয়ে ওঠা অধিকাংশ মোটর ট্রেনিং স্কুলই বেআইনি। কারণ স্কুল খুলতে নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। যিনি খুলতে চান তাঁর দু’টি বড় সাইজের ঘর থাকতে হবে। একটি প্রশিক্ষণের থিওরি ক্লাসের জন্য, অন্যটি নির্দিষ্ট ঠিকানার অফিস। মোটর মেকানিকসের উপর আইটিআই পাস করা একজন প্রশিক্ষক রাখতে হবে, এবং অবশ্যই তাঁর যেন পাঁচ বছর গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা থাকে।