অর্ণব আইচ: বিশ্বকাপ (ICC World Cup 2023) ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে কলকাতায় আসছেন পাকিস্তানি (Pakistan) দর্শকরাও। ম্যাচের এক মাস আগে থেকেই কতজন ক্রিকেটপ্রেমী এই শহরে আসছেন তাঁদের পরিচয় সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছেন কলকাতার গোয়েন্দারা। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কলকাতার গোয়েন্দারাও। ওই পাকিস্তানি দর্শকদের মধ্যে কারও সঙ্গে পাক চর সংস্থা আইএসআইয়ের কোনও যোগাযোগ থাকতে পারে কি না, সেদিকে রয়েছে গোয়েন্দাদের নজর।
পুজোর পরপরই কলকাতায় ক্রিকেট বিশ্বকাপ। পুজোয় বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা আসেন কলকাতায়। এর পর পরই বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে শহরে আসবেন বিদেশি অতিথিরা। সম্প্রতি পুলিশ (Kolkata Police) কমিশনার বিনীত গোয়েল একটি বৈঠকে লালবাজারের প্রত্যেক পুলিশকর্তা ও থানার ওসিদের নির্দেশ দেন, বিশ্বকাপ ম্যাচ দেখতে আসা বিদেশি অতিথিদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে প্রত্যেক পুলিশ আধিকারিককে বিশেষ নজর দিতে হবে। কলকাতা পুলিশ সম্পর্কে যাতে ভাল ধারণা নিয়েই অতিথিরা নিজেদের দেশে ফিরতে পারেন, সেই দায়িত্ব নিতে হবে প্রত্যেক পুলিশ আধিকারিককে।
[আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, গুরুতর আহত ৩৯ বিজেপি কর্মী]
যদিও তার আগেই ন’টি দেশের দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠক করলেন লালবাজারের কর্তারা। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন, বাংলাদেশ, ফ্রান্স, রাশিয়া, নেপাল, জাপান ও ইতালির দূতাবাসের কর্তারা লালবাজারে আসেন। দেশগুলির দূতাবাসের কর্তাদের সঙ্গে পুলিশের ক্রিকেট টিমের নিরাপত্তার ব্যাপারে আলোচনা হয়। যে হোটেলে বিদেশি টিম থাকবে, সেই হোটেলে পুলিশ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। তাঁদের যাতায়াতের পথে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই ওই বিদেশিরা কী করবেন ও কী করবেন না, সেই ব্যাপারে নিজের দেশের বাসিন্দাদের যাতে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়, সেই অনুরোধ দূতাবাস কর্তাদের জানানো হয়েছে। যেমন, বিদেশি অতিথিদের বিশেষ সতর্ক করা হবে, তাঁরা যেন অনলাইনে অথবা সঠিক পদ্ধতি মেনেই ইডেনের টিকিট কাটেন। তাঁরা যেন ব্ল্যাকে টিকিট কাটার চেষ্টা না করেন, অথবা কোনওভাবেই ব্ল্যাকারদের পাতা ফাঁদে পা না দেন। শহরের অচেনা বাসিন্দারা যদি গায়ে পড়ে তাঁদের সঙ্গে আলাপ করতে আসে, তবে যেন তাঁরা এড়িয়ে চলেন। বেশি রাতে শহরের নির্জন রাস্তায় কোনও বিদেশির পক্ষে একা বা দু’জন মিলে ঘোরাঘুরি না করাই ভাল। এতে অপরাধ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও যে হোটেলগুলিতে বিদেশি অতিথিরা থাকবেন, সেই হোটেলগুলিতে থাকবে পুলিশের কড়া নজর।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতায় পাকিস্তান টিমের সঙ্গে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের ম্যাচ আছে। পাকিস্তান যদি সেমিফাইনালে ওঠে, তবে আরও একটি ম্যাচ ওই টিম খেলতে পারে কলকাতায়। ফলে কলকাতায় পাক ক্রিকেটপ্রেমীরা আসবেন বলেই ধারণা পুলিশের। যদিও ক্রিকেটপ্রেমী বা ইডেনের দর্শকের আড়ালে আইএসআইয়ের কোনও এজেন্ট শহরে আসছে কি না, সেদিকে থাকবে গোয়েন্দাদের নজর। সেই ক্ষেত্রে ইডেনমুখী হওয়া ছাড়াও ওই পাক দর্শকরা শহরের কোথায় কোথায় যাচ্ছেন, অথবা তাঁরা অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কি না, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।