shono
Advertisement

ফ্লাইওভারে নিষিদ্ধ গাড়ি, ‘যশ’-এর মোকাবিলায় আর কী কী পদক্ষেপ কলকাতা পুলিশের?

তৈরি রাজ্যের হাসপাতালগুলিও।
Posted: 10:01 PM May 24, 2021Updated: 10:25 PM May 24, 2021
অর্ণব আইচ এবং ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ‘যশ’ (Cyclone Yaas) আসার আগেই গাছের তলা ও বিলবোর্ডের কাছ থেকে সরাতে হবে গাড়ি। কোনও গাড়ি যাতে এই জায়গাগুলিতে পার্কিং না করা হয়, তা দেখার জন্য কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডকে সতর্ক করল লালবাজার (Lalbazar)। ঝড়ের আগে থেকেই শহরের সমস্ত ফ্লাইওভারে যান চলাচল নিষিদ্ধ করছে কলকাতা পুলিশ। একই সঙ্গে ‘যশ’-এর মোকাবিলায় কলকাতায় বন দপ্তরের সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ। তাই এখন থেকেই শহরে তৈরি বন দপ্তরের ১৬টি টিম।
 
এদিকে, সোমবার থেকেই লালবাজারে শুরু হয়েছে ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড সেন্টার’-এর কাজ। এদিন এই সেন্টারের উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র (CP Soumen Mitra)। শহরবাসীর সুবিধার্থে চারটি হেল্পলাইন নম্বর (৯৪৩২৬১০৪২৯, ৯৪৩২৬১০৪৩০, ৯৪৩২৬১০৪৩৬ ও ৯৪৩২৬১০৪৫০) লালবাজার চালু করেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ কেউ সমস্যায় পড়লে এই হেল্পলাইনে ফোন করতে পারেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় গঙ্গায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তা এড়ানোর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে জলপুলিশও।
 
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগেও কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের সময় গাছের ডাল পড়ে ভেঙে তুবড়ে গিয়েছে গাড়ি। তাই এই বছর ‘যশ’-এর আগেই সতর্ক লালবাজার। এদিন লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের তরফ থেকে ট্রাফিক গার্ডগুলিকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গাছ, বিলবোর্ড, বিপজ্জনক বাড়ি বা পাঁচিল ও এমন কিছু, যা পড়ে গাড়ির ক্ষতি হতে পারে, তার তলায় যেন গাড়ি পার্ক না করা হয়। গাড়িগুলিকে সরানোর জন্য চলবে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান।

[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় যশের দিনই পূর্ণিমা ও চন্দ্রগ্রহণ, দুর্যোগ বাড়ার আশঙ্কায় ত্রস্ত আবহবিদরা]

নিরাপত্তার কারণেই ঝড় আসার সময় কলকাতার কোনও ফ্লাইওভার বা সেতুতে চলবে না কোনও যান। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কোনও পুলিশকর্মীও যেন গাছ, বিলবোর্ড বা বিপজ্জনক বাড়ির কাছে না দাঁড়ান। পুলিশের ওয়্যারলেস যন্ত্রগুলির যেন পুরো চার্জে থাকে। ঝড়ের আগেই ট্রাফিক গার্ড ও থানাগুলিকে ফ্লাইওভার, ব্রিজ ও রাস্তা থেকে গার্ডরেল ও ট্রাফিকের অন্যান্য সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নির্মীয়মান বহুতলের ক্রেন সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পুলিশের প্রত্যেকটি ইউনিটকে ড্রাগন লাইট ও জেনারেটার প্রস্তুত রাখতে হবে। পুরসভার সাহায্যে সরাতে হবে হোর্ডিং। পুলিশকর্মীরা যেন পর্যাপ্ত শুকনো খাবার সঙ্গে রাখেন।

Advertisement

ঘূর্ণিঝড়ের সময় কোনও পুলিশকর্মীকেই বাইরে বের হতে বারণ করা হয়েছে। রাস্তায় পড়ে যাওয়া গাছ সরানোর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার সরানোর জন্য সিইএসসি ও বিএসএনএলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে বলেছে লালবাজার। বন দপ্তরের ১৬টি টিম কলকাতার ন’টি ডিভিশনে তৈরি রাখা হচ্ছে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে যাবে সেই টিম। মঙ্গলবার থেকেই গঙ্গায় স্নান করতে বারণ করা হচ্ছে। দাঁড়াতে বারণ করা হচ্ছে ঘাটে। কোনও মাঝি বা মৎস্যজীবী যাতে নৌকা গঙ্গায় না নামান, সেই ব্যাপারেও তাঁদের সতর্ক করা হচ্ছে। আগেই বিপজ্জনক বাড়িগুলি চিহ্নিত করা হয়েছিল। বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের সরানোর কাজও শুরু হচ্ছে। নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁদের। কোনও বিপজ্জনক বা ভঙ্গুর পাঁচিলের পাশে যাতে কেউ না থাকেন, সেই ব্যাপারও সতর্ক করা হচ্ছে। এদিন থেকেই লালবাজারের পুরনো কন্ট্রোলরুমে তৈরি হয়েছে ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড সেন্টার’। এই বিশেষ কন্ট্রোলরুমে পুলিশকর্তারা ছা়ড়াও পুরসভা, সিইএসসি, এনডিআরএফ, সেনা, পিডব্লুডি, দমকল, কেএমডিএ ও অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা থাকছেন। কয়েকটি দপ্তরের জন্য ওই ঘরেই আলাদা সাব কন্ট্রোল রয়েছে। এই কন্ট্রোলে থাকা জায়েন্ট স্ক্রিনে ঘূর্ণিঝড় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সুপার সাইক্লোন মোকাবিলা করতে কলকাতার সব সরকারি হাসপাতালে তৈরি থাকবেন চিকিৎসকরাও । কোভিড রোগীদের জন্য আগামী সাতদিন ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম। শহরের সব সরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ৪০০চিকিৎসক, নার্স তৈরি থাকবেন। একই ব্যবস্থা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরের উপকূল এলাকার সাব ডিভিশন থেকে গ্রামীন হাসপাতাল পর্যন্ত। রাখা হচ্ছে জেনারেটর।  অন্তঃসত্ত্বাদের নিরাপদ এবং উঁচু জায়গায় পাঠানো হয়েছে। দুর্গাপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের চারটি সংস্থা থেকে ৪০০ টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনা হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: ‘যশে’ সাবধানী চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, ঘরবন্দি পশু-পাখিরা, তৈরি ‘লিটল আর্মি’ও]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement