সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাক্ষাৎ যেন দেবদূত! মাঝরাস্তায় বিপদের ত্রাতা হিসাবে হাজির পুলিশ! এক প্রৌঢ়ের জীবন বাঁচিয়ে ফের আলোড়ন ফেলেছেন কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের (Kolkata Traffic Police) ওসি শৌভিক চক্রবর্তী। আচমকাই একাধিক ‘পুলিশি বদনামে’র আবহেও ফের আলোচনায় তিনি।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকাল ৫টা নাগাদ হাওড়া ব্রিজের কাছের ব্রেবোর্ন রোড ফ্লাইওভারের উপর আচমকা থেমে যায় একটি গাড়ি। ঠিক তখনই এর কারণ খতিয়ে দেখতে এগিয়ে যান হাওড়া ব্রিজের (Howrah Bridge) ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসার ইন-চার্জ শৌভিক চক্রবর্তী। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে ওই পুলিশ আধিকারিক বলছেন, ”আমি যখন যানযটের কারণের উৎসে পৌঁছয়, দেখি একটি গাড়ির চালকের আসনে বসে ছটফট করছেন এক ব্যক্তি। পাশের আসন থেকে তাঁর স্ত্রী বেরিয়ে এসে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন।” ওই ওসির কথায়, ”ঠিক তখনই বুঝতে পারি ওই ব্যক্তির শরীরের অবস্থা ভালো নয়। কিন্তু কোনও সাধারণ গাড়িতে করে বা অ্যাম্বুলেন্সেও হাসপাতালে পাঠাতে পারছিলাম না!”
ঠিক এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই ওই পুলিশ আধিকারিক তাঁর জন্য বরাদ্দ সরকারি গাড়িতে তুলে নেন অসুস্থকে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা করেন ‘গ্রিন করিডোরে’র। তারপর মাত্র ৫ মিনিটেই অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে নিয়ে তিনি পৌঁছে যান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Kolkata Medical College) । সেখানেই চিকিৎসার বন্দোবস্ত হয় ওই ব্যক্তির। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আগের চেয়ে ভালো আছেন ওই প্রৌঢ়। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমনই জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
[আরও পড়ুন: ফের খাস কলকাতায় শিক্ষাঙ্গনে র্যাগিং, এবার পড়ুয়াকে শারীরিক নিগ্রহ, কুইঙ্গিত সিনিয়রদের!]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বনাথ দাস। বছর ৬০-র প্রৌঢ় অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। তাঁর স্ত্রী শ্বাশ্বতী দেবী সিইএসসি-তে চাকরি করেন। তাঁরা উত্তর কলকাতার পাইকপাড়ার বাসিন্দা বলেও জানা গিয়েছে।
চলন্ত গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিকে এভাবে উদ্ধারের জন্য কলকাতা পুলিশের তরফ থেকেও প্রশংসিত হয়েছেন শৌভিক চক্রবর্তী। শুধু তিনি নন তাঁর সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে উঠে এসেছে কনস্টেবল প্রসেনজিৎ রায় ও হোমগার্ড রাজু দেবনাথের নামও।
[আরও পড়ুন: বেঁচে থাকলে ছেলের বয়স হত ১৮, সন্তানহারাদের হাহাকারে কি ‘সাবালক’ হল যাদবপুর? ]
এ প্রসঙ্গে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে পুলিশ আধিকারিক শৌভিক চক্রবর্তী বলছেন, ”পুলিশ তো মানুষের জন্য। আমাদের কাজই হল সকলের পাশে থাকা। যে পরিস্থিতির মধ্যে ওই অসহায় দম্পতি পড়েছিলেন তখন আমার হাতে আর কোনও উপায় ছিল না।” রোগীর পরিবারের সদস্যরাও ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই পুলিশকর্তাকে। আর এখানেই কেউ কেউ বলছেন, ঘুষ থেকে শুরু করে দুর্ব্যহার, পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের পরেও এমন পুলিশ পাওয়া কিন্তু সৌভাগ্যেরই বটে!