shono
Advertisement

Breaking News

মহাধমনির গায়ে জমাট রক্ত! নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রোগীকে বাঁচাল NRS

'ভাবতেই পারছি না বেঁচে আছি', সুস্থ হয়ে সরকারি হাসপাতালে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুন্দরবনের বাসিন্দা।
Posted: 09:43 AM Jul 27, 2021Updated: 09:43 AM Jul 27, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: শরীরে রক্ত জমাট বাঁধলেই বিপদ। আরও বিপদ যদি মহাধমনির গায়ে রক্ত জমাট বাঁধে। যদি সেই জমাট বাঁধা রক্তের আয়তন ছ’ইঞ্চির বেশি হয় তাহলে তো মৃত্যু নিশ্চিত। সুন্দরবনের মৌখালি এলাকার বাসিন্দা শংকর দাসেরও বাঁচার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু NRS হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল ৫৬ বছরের প্রৌঢ়ের।

Advertisement

প্রায় এক মাস ধরে পেটের অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছিলেন শংকর দাস। কেউ বলেন কিডনির স্টোন, কেউ আবার গল ব্লাডারের সমস্যার কথা জানান। ব্যথা নিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে শেষে NRS হাসপাতালের দুয়ারে হাজির হন। প্রথমে মেডিসিন বিভাগে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগে। সে প্রায় দিন ১৫ আগের ঘটনা। কার্ডিওলজির চিকিৎসকরা রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেন তাঁর মহাধমনির গায়ে ফুটো হয়ে রক্ত জমাট বেঁধেছে। অনেকটা মৌচাকের মতো। আবার সেই থলির মধ্যে রক্ত ঘুরপাক খাচ্ছে।

হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, বুকে ধাক্কা লেগে এমন সমস্যা হতে পারে। কিন্তু শংকর দাসের সঙ্গে তেমন কোনও ঘটনা হয়নি। ঠিক হল মহাধমনির ওই রক্তথলি কেটে বাদ না দিয়ে স্টেন বসানো হবে। হাসপাতালের কার্ডিওভাস্কুলার সার্জেন ডা. শুভব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “রোগীর ওই থলির আয়তন প্রায় ১০ সেন্টিমিটার। ফেটে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। যথেষ্ট ঝুঁকি ছিল। তাই স্টেন বসানো একমাত্র উপায়।”

[আরও পড়ুন: দূরপাল্লার ট্রেনে রিজার্ভেশন থাকলেও মিলছে না লেকালের টিকিট, বিপাকে যাত্রীরা]

সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার। তায় আবার অতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। স্টেনের দাম প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। পরিকাঠামো থাকলেও এমন অস্ত্রোপচার আগে হয়নি NRS হাসপাতালে। রিকুইজিশন দেওয়া হল নিয়ম মেনে। যেখানে অন্তত দু’সপ্তাহের আগে এমন স্টেন জোগাড় করা যায় না। স্বাস্থ্য দপ্তরের সৌজন্যে মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে চলে আসে ‘প্রাণভোমরা’ স্টেন। NRS সূত্রে খবর, দ্রুত স্টেন জোগাড় সম্ভব হয়েছে স্টোর কিপার দেবব্রত ঘোষের বিশেষ উদ্যোগে।

১২ জুলাই শংকর দাসের অস্ত্রোপচার হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর রোগীকে পর্যবেক্ষণ কক্ষে কয়েক ঘণ্টা রাখার পর বেডে পাঠানো হয়। এর আগে এমন অস্ত্রোপচারের কৃতিত্ব SSKM হাসপাতালের ছিল। তবে রোগীর চাপ বাড়ছে। এবার শিয়ালদহ স্টেশন লাগোয়া NRS হাসপাতালে এমন অত্যাধুনিক চিকিৎসা কৌশল চালু হওয়ায় নিখরচায় চিকিৎসার সুযোগ আরও বড় হল। সোমবার বাড়ি ফেরার সময় বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. পরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নমস্কার করে শংকরবাবু বলেছেন, “ভাবতেই পারছি না বেঁচে আছি। সরকারি হাসপাতালে এত সুবিধা, সুন্দরবনে বসে জানতেই পারিনি। এখন অনেক ভাল আছি স্যার।” যাঁকে তিনি ‘স্যার’ সম্বোধন করলেন, তিনি ততক্ষণে রোগীর ভিড়ে মিশে গিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: লালবাজারের Special অফিসারের পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তার ভুয়ো IPS, বাজেয়াপ্ত নীল বাতির গাড়িও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement