shono
Advertisement

স্কুল-কলেজ বন্ধ, কোচিং সেন্টারগুলোর দিকে তাকিয়েই এবার সরস্বতী গড়ছে কুমোরটুলি

হাতে গোনা সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করে বিক্রিটাই এখন আসল লক্ষ্য।
Posted: 03:10 PM Jan 15, 2021Updated: 03:10 PM Jan 15, 2021

অভিরূপ দাস: আনলক পর্বে এ রাজ্যে স্কুল-কলেজের ঝাঁপ খোলেনি এখনও। কবে খুলবে, তাও জানা নেই। মাস পেরলেই আবার বিদ্যাদেবীর আরাধনার তিথি। এমতাবস্থায় বাণীবন্দনায় ব্যবসার জন্য কুমোরটুলি (Kumortuli) তাকিয়ে আছে কোচিং সেন্টারের দিকে। যদি তাতেও মা সরস্বতীর (Saraswati Puja) কিছু মূর্তি বিক্রি হয়, অন্তত কাঁচামালের খরচটা তো উঠবে। পাড়ায় পাড়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো কোচিং সেন্টার। স্কুল না খুললেও সেখানে জোরকদমে চলছে পড়াশোনা। সে ভিড়ের দিকেই নজর রেখে মাটি পাকাচ্ছেন শিল্পীরা।

Advertisement

দু-একটা থিমের সরস্বতী পুজো বাদ দিলে, দশভুজার সঙ্গে বাণীবন্দনার ফারাক বিস্তর। দুর্গাপুজোর মতো সরস্বতীর অগ্রিম বরাত হয় না। আগেভাগে থরে থরে ঠাকুর বানিয়ে রাখেন শিল্পীরা। ফি বছর পটুয়াপাড়ায় গিয়ে ঠাকুর পছন্দ করে ‘রেডিমেড’ কিনে নিয়ে যায় ছাত্রছাত্রীরা। এ বছর স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সে গুড়ে বালি। দুটো-তিনটের বেশি ঠাকুর বানানোর সাহসই পাচ্ছেন না মৃৎশিল্পীরা। “বিক্রি না হলে শুধু গোডাউন ভরতি হবে”, জানিয়েছেন শিল্পী সনাতন পাল। যে সনাতন আগের বছরও পঞ্চাশটা প্রতিমা বানিয়েছিলেন, এবার তিনি দশটার বেশি সরস্বতী মূর্তি তৈরি করছেন না। আশা-আশঙ্কার দোলাচলে তাই তাঁদের শেষ ভরসা প্রাইভেট টিউশনের কেন্দ্রগুলো। মৃৎশিল্পী নব পালের কথায়, “বড় বড় কোচিং সেন্টার খুলে গিয়েছে। শারিরীক দূরত্ব রেখে ক্লাস চলছে। এ বছর অনেক কোচিং সেন্টারই পুজো করছে। তাদের উপরেই নির্ভর করে রয়েছি আমরা।”

[আরও পড়ুন: কে ডি সিংয়ের টাকাতেই হয়েছিল নারদের স্টিং! এবার ইডির নজরে ম্যাথু স্যামুয়েলের বয়ান]

এদিকে, বিক্রিবাটা তলানিতে ঠেকলেও ঠাকুর বানানোর কাঁচামালের দাম কমেনি। বরং আকাশ ছুঁয়েছে। গেল বছরও একটা বাঁশের দাম ছিল ১০০ টাকা। এবার পিস প্রতি দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। এক অবস্থা খড়েরও। তবে নতুন ধান ওঠায় এই মুহূর্তে সামান্য হলেও কমেছে খড়ের দাম। মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ পাল বলছেন, “গত বছর এক মোট খড় ছিল দেড়শো টাকা। এবার সেটাই ৩০০। যদিও এই মুহূর্তে নতুন ধান ওঠায় খড়ের দাম সামান্য কমেছে।” মিল—কারখানা বন্ধ থাকায় দড়ির দামও চড়া। লকডাউনের আগে প্রতি কেজি দড়ির দাম ছিল পঁচাত্তর থেকে আশি টাকা। এই মুহূর্তে সেটাই ১১০ টাকা। অগ্নিমূল্য দিয়ে কাঁচামাল কিনে ঠাকুর তৈরি করে ফেলে রাখার কথা ভাবতেও পারছেন না মাটির কারিগররা।

[আরও পড়ুন: ‘পুলিশের ভয়ে তৃণমূলে থাকতে বাধ্য হন সকলে’, শতাব্দীকে বিজেপিতে স্বাগত জানালেন দিলীপ]

কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সাংস্কৃতিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রঞ্জিত সরকার জানিয়েছেন, কুমোরটুলিতে ১১০টা দোকানঘরে সরস্বতী তৈরি হয়। প্রতি বছর প্রতিটি দোকানঘরে গড়ে ওঠে ন্যূনতম ১০০টি ঠাকুর। এবার তার অর্ধেকও হবে না। রঞ্জিতবাবুর কথায়, “স্কুলে স্কুলে অনলাইনে ক্লাস চলছে। পড়াশোনার জন্য ১১ মাস স্কুল খোলেনি, পুজোর জন্য তো আর আলাদা করে খুলবে না।” বাড়ির পুজোর উপরেও ভরসা রাখছেন অনেক মৃৎশিল্পী। তাঁরা জানিয়েছেন, “স্কুল বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা বাড়িতে পুজোর উপর এবার জোর দেবেন। বাড়ির ঠাকুর যদিও আকারে অনেক ছোট, তবু তো কিছু বিক্রি হবেই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement