গোবিন্দ রায়: বিচারপতি অনুপস্থিত। তাই বসল না বিশেষ বেঞ্চ। আদালত অবমাননা মামলায় তাই কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে হাজিরা নথিভুক্ত হল কুণাল ঘোষের। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "আমার বিরুদ্ধে রুল জারি হয়েছিল। কেন আমাকে জেলে পাঠানো হবে না বা শাস্তি দেওয়া হবে না, বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে সশরীরে উপস্থিত থেকে সেই কারণ দর্শানোর কথা ছিল। তাই আমি আজ এসেছিলাম। বিশেষ বেঞ্চের একজন বিচারপতি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি প্রয়োজনে নেই। তাই বেঞ্চ বসেনি। কিন্তু রুলটায় লেখা ছিল আসতে হবে। আমার তরফে ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং অয়ন চক্রবর্তী, রাহুল মিশ্র।"
সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, "আমি চণ্ডীগড় থেকে এই মামলার জন্য এসেছি। আমার মক্কেলও এসেছেন, এবার কী হবে? বেঞ্চ তো যে কোনও কারণেই হোক বসছে না।" এরপর বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে কুণাল ঘোষের উপস্থিতি নথিভুক্ত হয়।
উল্লেখ্য, এসএলএসটি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা প্রার্থীদের আদালত চত্বরে এক বিতর্কিত বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে আদালত অবমাননার মামলা হয়। প্রধান বিচারপতি এই মামলার জন্য তিন বিচারপতির একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছেন। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে একদম শেষে কুণাল ঘোষের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ মে এই মামলার শুনানিতে আদালতে কুণাল ঘোষের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য ও অয়ন চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের হলফনামা প্রস্তুত। আমরা এখনই জমা দিতে পারি। কিন্তু যেহেতু আদালতের নির্দেশে ঘটনা নিয়ে পুলিশ রিপোর্ট জমা পড়েছে এবং আগের দিন রাতে আমরা তার কপি পেয়েছি, তাই তার উল্লেখ আমাদের হলফনামায় থাকা দরকার। সেই কারণেই আমার মক্কেল কুণাল ঘোষের হলফনামা জমা পড়েনি।” কুণালের আইনজীবীরা আরও বলেন, বিতর্কিত বিক্ষোভের ঘটনার দিন কুণাল ঘটনাস্থলেই ছিলেন না।
এরপরই আদালত জানায়, শুধু কুণাল ঘোষ নয়, এই মামলায় যেহেতু কোনও অভিযুক্তই জবাবি হলফনামা দেননি, তাই হাই কোর্ট সকলেরই বিরুদ্ধে রুল জারি করে। সেই রুল অনুযায়ী, ১৬ জুন, সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় তাঁকে হাই কোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের সামনে উত্তর-সহ সশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এও বলা হয়, আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি আদালত থেকে বেরতে পারবেন না। সেই অনুযায়ী এদিন আদালতে উপস্থিত হন কুণাল ঘোষ। তবে বিচারপতি অনুপস্থিত থাকায় বসেনি বিশেষ বেঞ্চ। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে হাজিরা নথিভুক্ত হয়েছে। আপাতত আদালত থেকে বেরতে আর কোনও বাধা নেই তাঁর।
