অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: প্রেমে (Love) বাধা হয়েছিলেন প্রেমিকার মা। যার জন্য প্রেমিকার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল। প্রেমিকা অন্য একজনের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কে জড়িয়েছে, স্রেফ এই ধারণায় প্রেমিকার মায়ের উপর প্রতিশোধ নিতে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে প্রেমিক! চলতি মাসে বেলুড়ে (Belur)গৃহবধূর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল বালি থানার পুলিশ। শুক্রবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে হাওড়া (Howrah)জেলা আদালত।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রেমিকার মা বেলুড়ের বাসিন্দা দীপা দাসকে খুন করে তাঁরই বড় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিক (Ex lover)মনোতোষ মণ্ডল। গত ১৬ অক্টোবর রাতে দীপাদেবীকে খুনের অভিযোগে শুক্রবার মনোতোষকে সুন্দরবনের তিনজালি গোদরাহাট খোলাপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে বালি থানা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিকার মাকে খুন করে সুন্দরবন হয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) পালানোর ছক ছিল ধৃত মনোতোষের। কিন্তু তার আগেই বালি থানার পুলিশের সক্রিয়তায় গোটা বিষয়টি সামনে চলে আসে। অভিযুক্তের সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: কৃত্রিম প্রজননে গোপনে নিজেরই শুক্রাণু ব্যবহার করে বেকায়দায় চিকিৎসক! দায়ের হল মামলা]
গত ১৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বেলুড় ধর্মতলা রোডের একটি বাড়ির একতলার শোয়ার ঘরের মেঝে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় গৃহবধূ দীপাদেবীর দেহ উদ্ধার হয়। গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী অক্ষয় পাল রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দেহটি দেখতে পেয়েছিলেন। ওই বাড়িতেই অক্ষয়বাবুর সঙ্গে ভাড়া থাকতেন দীপাদেবী। অক্ষয়বাবুই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ফরেনসিকের সাহায্য নিয়ে যে ঘরে দীপাদেবীর দেহ পড়েছিল, সেখানকার নানা নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত নেমেই পুলিশ জানতে পারে, দীপাদেবীকে খুন করেছে মনোতোষ নামে এক ব্যক্তি।
এর পর মনোতোষের খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, দীপাদেবীর দ্বিতীয় স্বামী অক্ষয়বাবুই পুলিশের কাছে ঘটনার পরেরদিন অর্থাৎ ১৭ অক্টোবরই খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দীপাদেবীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর তিনি অক্ষয়বাবুকে বিয়ে করেন। দীপাদেবীর প্রথম পক্ষের তিনটি মেয়ে রয়েছে। তারা দীপাদেবীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে হুগলিতে থাকে। এই প্রথম পক্ষের তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকই হল অভিযুক্ত মনোতোষ।
[আরও পড়ুন: এক বছরে সাড়ে ৫ লক্ষ সরকারি চাকরি, লক্ষ্য কি পূরণ হল মোদি সরকারের?]
সে নিউটাউনের (New Town) বাসিন্দা। পুলিশ আরও জানিয়েছে, দীপাদেবী দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বেলুড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকলেও সেখানে তাঁর প্রথম পক্ষের বড় মেয়ে ও মনোতোষের যাতায়াত ছিল। আর পরিচিত জায়গা হওয়ার জন্যই ১৮ তারিখ রাতে বেলুড়ের বাড়িতে এসে দীপাদেবীকে খুন করে পালিয়ে যায় মনোতোষ। ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে মনোতোষ স্বীকার করে, দীপাদেবীর বড় মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পিছনে দীপাদেবীই দায়ী। তাই তার উপর প্রতিশোধ নিতে দীপাদেবীকে খুন করেছে।