সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাঁসখালিতে কিশোরীর ধর্ষণ ও মৃত্যুর (Hanskhali Rape Case) ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য। চলছে শাসক-বিরোধী জোর তরজা। ইতিমধ্যেই কিশোরীর প্রেমিক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক রং না দেখে ঘটনার যথাযথ তদন্ত হবে বলেই আশ্বাস তাঁর।
মিলনমেলা প্রাঙ্গণের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) হাঁসখালি কাণ্ডে বলেন, “আপনি রেপড বলবেন নাকি প্রেগন্যান্ট বলবেন নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? সেটা খতিয়ে দেখেছেন কী? আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছি। হাঁসখালিতে খুব খারাপ ঘটনা ঘটেছে। মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখ, পুলিশ জেনেছে ১০ তারিখে। আপনারা বলুন কোনওরকম অভিযোগ থাকলে ৫ তারিখ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন? দেহটা পুড়িয়ে দেওয়া হল। আমি সবটা না জেনেও বলছি প্রমাণ পাবে কোথা থেকে? আসলে ধর্ষণ নাকি অন্তঃসত্ত্বা ছিল নাকি অন্য কোনও কারণ আছে? নাকি কেউ ধরে দু’টো চড় মেরেছে? শরীরটা খারাপ হয়েছে। প্রেমের সম্পর্ক তো ছিলই শুনেছি। বাড়ির লোক, পাড়ার লোকেরাও জানত। এখন যদি কোনও ছেলেমেয়ে, কেউ কারও সঙ্গে প্রেম করে, আমার পক্ষে তাকে আটকানো সম্ভব নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে লাভ জিহাদ করব। এটা তার স্বাধীনতা। হ্যাঁ এটা আমরা নিশ্চয়ই দেখব, যদি কেউ কোনও অন্যায় করে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে কোনও রং দেখা হচ্ছে না।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশের পাশাপাশি শিশু সুরক্ষা কমিশনও ঘটনার তদন্ত করবে।
[আরও পড়ুন: SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: কলকাতা হাই কোর্টে বিস্ফোরক রিপোর্ট তদন্তকারী কমিটির]
হাঁসখালি কাণ্ডে অভিযুক্ত সোহেল গোয়েল স্থানীয় তৃণমূল নেতার ছেলে। আর তার ফলে ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। এই প্রসঙ্গেও বিরোধীদের খোঁচা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তৃণমূল, তৃণমূল করে বেড়াচ্ছেন? বাংলায় সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন? মা, বাবা, ভাইবোন সকলেই তৃণমূল। দল কি শিখিয়ে দিয়েছে? বাবা দল করেন। ছেলে কার সঙ্গে কী করছে, তাতে দল কী করবে?”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ হাঁসখালি কাণ্ড নিয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, “হাঁসখালির ঘটনা কাম্য নয়। অযথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে।” যদিও কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এসব দাবি মানতে নারাজ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে একথা বলা উচিত নয় বলেই দাবি অধীরের।
এদিকে, হাঁসখালি কাণ্ডের পাশাপাশি এদিন কেশপুরে (Keshpur) একটি খুনের ঘটনায় ১২১জন তৃণমূল নেতাকে সিবিআই তলব নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “২০২৪-এ তৃণমূল বেগ দেবে এটাই আসল ভয়। একটা খুনে ১২১ জনকে তলব? এটা কেমন তদন্ত? কী চলছে সবাই জানি। এত দুর্বল ভাববেন না। শান্তির জন্য যা যা করা দরকার তা করব। আজকে লোকে দু’টো খেতে পাচ্ছে আপনাদের ভাল লাগছে না।”