সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনে যত নির্বাচন লড়ছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কুৎসার মোকাবিলা করতে হয়েছে ২০২৪ লোকসভায়। বইমেলায় প্রকাশিত নিজের নতুন বই ‘বাংলার নির্বাচন ও আমরা’-তে মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি ভোটে জিততে সন্দেশখালি ইস্যুকে হাতিয়ার করে মিথ্যাচার করে গিয়েছে। সেই মিথ্যাচার সরিয়ে মানুষের সমর্থনেই জিতে এসেছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সাফল্যের পিছনে মানুষের সমর্থন ও তাঁর উন্নয়নমূলক কাজকে সামনে এনেছেন মমতা। বিজেপির বাংলায় পরাজয় সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, 'রাজ্য থেকে এই অশুভ শক্তিকে প্রায় মুছে দিতে পেরেছি আমরা। এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, বাংলায় যেটুকু ভোট পেয়েছে সেকটি আসন আসলে জনরায় নয়। বরং কারচুপি করে জিতেছে। আচমকা ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা যদি সত্য হয় তাহলে লোকসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় ঘটেছে।’’ মমতা একহাত নিয়েছেন সন্দেশখালির ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপি ‘মিথ্যাচার’কে। সরাসরি দায়ী করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি লিখেছেন, ‘‘ধর্ষণের অভিযোগের গোটাটাই সাজানো। কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে মহিলাদের বিপথে চালিত করা হয়েছে। আর এই চিত্রনাট্যের পরিচালনায় ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা গদ্দার স্বয়ং। সন্দেশখালির মা-বোনেদের সঙ্গে যা ঘটেছে তার জন্য হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখিত হয়েছিলাম আমি। তাঁদের আত্মসম্মান পদদলিত করে ভোটে জিততে চেয়েছিল বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।'
মুখ্যমন্ত্রী বইয়ে উল্লেখ করেছেন, দুই তৃতীয়াংশ সংবাদমাধ্যম তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছিল। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম তৃণমূলকে ১২-১৩ টা আসন দিচ্ছিল। ঠিক যেমন ২০১৬ নির্বাচনের আগে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম সিপিএম ক্ষমতায় আসছে বলে আগাম মন্ত্রিসভাও গঠন করে ফেলেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, "একদিকে মানি পাওয়ার, একদিকে এজেন্সি পাওয়ার, তার সাথে যাদের হাতে নির্বাচন পরিচালনার ভার সবাই একতরফা তৃণমূলের বিরোধিতা করে গিয়েছে।"
মমতা বিজেপি ও সিপিএমকে আক্রমণ করে আরও লিখেছেন, ‘‘২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে ওরা উল্লাস করেছে। আমি তখনই বলেছিলাম, যারা ছেলেমেয়েদের চাকরি খেয়েছে তাদের আমরা ছেড়ে দেব না। বাংলা স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল। এইভাবেই ১০ লক্ষ চাকরি আটকে রেখেছে মামলা করে। বিজেপি আসলে বাংলা বিরোধী দল।’’ মমতা মনে করছেন তিনি জীবনে যত নির্বাচনে লড়েছেন তার মধ্যে এই লোকসভা ভোটেই সবচেয়ে বেশি কুৎসার মোকাবিলা করতে হয়েছিল তাদেরকে। তবু ১০০ শতাংশ মানুষের আশীর্বাদ সঙ্গে ছিল বলে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর দলের এই ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ইত্যাদি প্রকল্পের সাফল্যকেই সামনে এনেছনে মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের সীমাহীন বঞ্চনা।
