অর্ণব আইচ: অ্যাপ ক্যাব করে এসে দ্বিতীয় হুগলি সেতু (Vidyasagar Setu) থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন যুবক। সোমবার রাতের ঘটনায় ডুবুরি নামিয়ে যুবকের সন্ধান চালানো হয়। গভীর রাত পর্যন্ত গঙ্গায় তল্লাশি চালান হেস্টিংস থানা ও রিভার ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকরা। রাতে বিদ্যাসাগর সেতুতে পুলিশের টহলদারি থাকে না। সেই সুযোগে তিনি ক্যাবে করে সেখানে পৌঁছে সিগারেট খাওয়ার নাম করে সেতুর রেলিংয়ে দিকে চলে যান। তারপরই ঝাঁপ (Jump) দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম আহাদ ওয়াজিদ ওরফে তাহের হোসেন। বয়স ৩৮ বছর। বাড়ি একবালপুর (Ekbalpur) থানা এলাকায়। আহাদ ওরফে তাহের পেশার কাপড়ের ব্যবসায়ী। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন যে, লকডাউনের (Lockdown) পর থেকে তাঁর ব্যবসার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। ক্রমে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন তিনি। পরিবারের লোকেরা তাঁকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলেন। জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ হাওড়া থেকে অ্যাপ ক্যাব (App Cab) বুক করেন তিনি। একবালপুরে যাওয়ার নাম করে চালককে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরতে বলেন। গঙ্গার প্রায় মাঝামাঝি ক্যাব এলে তিনি চালককে বলেন, সিগারেট খাবেন। ক্যাবে বাতানুকুল যন্ত্র চলছিল বলে ভিতরে ধূমপান করবেন না বলে জানান। তিনি মাত্র কয়েক মিনিটই দাঁড়াতে বলেন চালককে। চালক রাজি হয়ে যান। তখন ফাঁকাই ছিল সেতু।
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা! মাঝরাতে তৃণমূল মুখপাত্র সাকেত গোখলেকে গ্রেপ্তার করল গুজরাট পুলিশ]
ক্যাব চালক পুলিশকে জানিয়েছেন, গাড়ি থেকে নেমে সেতুর রেলিংয়ের দিকে এগিয়ে যান ওই যাত্রী। প্রথমে চালক মনে করেছিলেন সিগারেট (Cigrett) ধরাতে যাচ্ছেন এই ব্যক্তি। কিন্তু তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎই তাঁর চোখের সামনে রেলিং টপকান যুবক। বিপদ বুঝে তিনি দৌড়ে বাধা দিতে যান। কিন্তু তার আগেই গঙ্গায় ঝাঁপ দেন তিনি।
অন্ধকারের মধ্যে গঙ্গায় চালক ওই ব্যক্তির চিহ্ন দেখতে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত লালবাজারের (Lalbazar) কন্ট্রোলরুমে ফোন করে ঘটনাটি জানান। লালবাজারের কাছ থেকে খবর পেয়ে হেস্টিংস থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। খবর দেওয়া হয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ (DMG) ও জলপুলিশকে। রাতেই ডুবুরিরা গঙ্গায় নেমে যুবকের সন্ধান চালান। ক্যাব বুকিং-এর মাধ্যমেই ওই ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর পুলিশ জানতে পারে। সেই সূত্র ধরেই ব্যবসায়ী যুবকের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: প্রচার নেই, ৯ বছরে বিকোয়নি মেট্রোর ৩০০ টুরিস্ট কার্ডও]
দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়ার রুখতে কিছু জায়গায় ফেন্সিং (Fencing) বসানো হয়েছে। পুরো সেতু বেড়া দিয়ে ঘেরার জন্য পুলিশের পক্ষে এইচআরবিসিকে (HRBC) চিঠিও লেখা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে টহলদারি বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।