সুদীপ রায়চৌধুরী: সংঘাত নয়, বাংলার যে কোনও উন্নয়নমূলক কাজে সবসময় পাশে রয়েছেন রাজ্যপাল। বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে পদে বসার বর্ষপূর্তিতে এমনই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বার্তা দিলেন সিভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। মঙ্গলবার রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS) নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করায় রাজ্যপালের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ”রাজ্যের যে কোনও ভালো, উন্নয়নমূলক কাজে আমি পাশে রয়েছি। মানসিকভাবে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আছি।” সূত্রের খবর, এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি রাজ্যপালকে। আর সেই কারণেই রাজ্যপালের এই কৌশলী মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী ২২ নভেম্বর এ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এক বছর পূর্ণ করবেন সিভি আনন্দ বোস। এই একটা বছর কেমন কাটালেন বাংলায়, তা নিয়েই এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। পাশাপাশি সাম্প্রতিক একাধিক বিষয় নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। সেখানেই উঠে এসেছে রাজ্যের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে। ‘আপনি কি বাণিজ্য সম্মেলনে যাচ্ছেন?’, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ”আমি এখান থেকেই বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নিচ্ছি। মানসিকভাবে বাণিজ্য সম্মেলনে আছি। এই সম্মেলনে যে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানাতেই হবে, তার কোনও মানে নেই।”
[আরও পড়ুন: পাটের পর প্লাস্টিক, হাওড়ার গুদামে ফের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড]
পাশাপাশি তিনি রাজ্য সরকারের প্রতি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বার্তা দিয়েছেন। রাজ্য সরকার রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করে। আর যেখানে জনস্বার্থে কাজ, সেখানেই তিনি পাশে থাকবেন বলে জানান। কোনও সংঘাত কিংবা দ্বন্দ্ব নয়, সি ভি আনন্দ বোসের সাফ কথা, ”কারও বিরোধিতা করব না। সত্যের পক্ষে থাকব সবসময়।” এককথায় উড়িয়ে দিলেন রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের বহুচর্চিত সমালোচনা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে, হিংসা রুখতে পুলিশকে সক্রিয় হতে হবে বলে মনে করেন তিনি। আর এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে বিশ্বাস করেন সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, ”সরকার নির্বাচিত। আর রাজ্যপালের পদ মনোনীত। জনগণের কাজ করবে সরকার আর রাজ্যপালের কর্তব্য, সরকারের যে কোনও কাজে পাশে থাকা। এই সামঞ্জস্য়টাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।” সবমিলিয়ে, বর্ষপূর্তিতে বাংলার ‘আপনজন’ হয়ে ওঠার চেষ্টাই করলেন সাংবিধানিক প্রধান।