সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভার নির্বাচনের (Lok Sabha Election)আগে ঘাসফুল, পদ্ম শিবিরের প্রস্তুতির পাশাপাশি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বাম যুব সংগঠনের সমাবেশের দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক শিবিরের। বিশেষত ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক তথা যুবদের ‘ক্যাপটেন’ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের (Minakshi Mukherjee) বক্তব্যের দিকে। রবিবার DYFI-এর ব্রিগেড সমাবেশ কার্যত বুঝিয়ে দিল, পক্ককেশ কমরেডদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবেই তৈরি হচ্ছেন আসানসোল (Asansol) শিল্পাঞ্চলের মেয়ে। শরীরী ভাষায় চ্যালেঞ্জ নেওয়ার অনমনীয় মানসিকতা, ভাষণে ঝাঁজ এবং উদ্দীপ্ত করার শক্তি – সবই রয়েছে তাঁর। তবে বরাবর মাঠে নেমে লড়াই করা নেত্রীর ভাষণে তথাকথিত ‘মার্কসীয় তত্ত্ব’-এর কচকচানি অনেক কম। বরং ব্রিগেডের ময়দানে লড়াইয়ের কথা বলতে মীনাক্ষী আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন খানিকটা। স্মরণ করলেন সহকর্মী শহিদ কমরেডদের কথা, ফিরে গেলেন নিজের ছোটবেলায়।
এদিন দুপুরে ব্রিগেডের মঞ্চে উঠে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় প্রথমেই সরাসরি ‘ডানপন্থী’দের খোঁচা দিলেন। বললেন, ”ডানদিকের লোকজন বলছে, তাদের অসুবিধা হচ্ছে। আমি বলি, বামপন্থীরা যখন মাঠের দখল নেয়, ডানদিকের লোকজনের অসুবিধাই হয়।” বার বার তাঁর ভাষণে উঠে এল মাঠের লড়াইয়ের কথা। যে মাঠ থেকে রাজনীতিকে ‘খেলা হবে’ বলে ডাক দিয়েছিল, সেই মাঠের দখল আজ বামপন্থী ছাত্র-যুবরা নিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’, মমতার প্রস্তাবিত রাজ্য সঙ্গীত দিয়েই শুরু বামেদের ব্রিগেড]
DYFI যুবনেত্রী ফিরে গেলেন ছোটবেলায়। বললেন, ”অনেক ছোট থেকে ব্রিগেডে আসছি বাবার হাত ধরে। মঞ্চ তখন ওদিকে হতো, ওই কোনায় গিয়ে বসতাম। শিখেছিলাম, রাজনীতি করতে হলে পাশের জনের হাত ধরে এগিয়ে যেতে হবে। এটা শিখিনি যে রাজনীতি করতে হলে চোরের ঘরে জন্ম নিতে হবে, চুরি করতে হবে।” বললেন, ”শহিদ কমরেডদের লাশ বয়েছি এই কাঁধে। এখনও তাকালে মইদুলকে দেখতে পাই, সালিম খানের আর্তনাদ কানে ভাসে। সুদীপ্ত-সইফুদ্দিনদের লাশ বয়েছি। সেই গন্ধ এখনও নাক থেকে যায়নি।”
[আরও পড়ুন: আলবিদা ওয়ার্নার, বিদায়বেলায় খুদে সমর্থককে হেলমেট-গ্লাভস উপহার অজি তারকার]
৫০ দিনের ইনসাফ যাত্রার সমাপ্তি হিসেবে আজকের ব্রিগেড সমাবেশ। কিন্তু এই লড়াই আসলে কীসের লড়াই, তা নিজের বক্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন মীনাক্ষী। সাংসদ, বিধায়ক হওয়ার জন্য বামেরা লড়াই করে না। তাই ৫০ দিনের ‘ইনসাফ যাত্রা’র এখানেই শেষ নয়। লড়াই চলবে রুটি, রুজির জন্য। লড়াই করবেন মেহনতি মানুষ বঞ্চনার বিরুদ্ধে। লড়াই হবে গোটা সিস্টেম বদলে ফেলার জন্য। বাম যুবনেত্রীর প্রায় আধঘণ্টার ভাষণ যথেষ্ট উদ্দীপনাময়। কিন্তু তাতে কতটা চাঙ্গা হল দল? লড়াইয়ের জন্য কতটাই বা প্রস্তুত? এসব প্রশ্ন থাকছেই।