অর্ণব আইচ: ফের কলকাতাকেই নিরাপদতম শহরের তকমা দিল কেন্দ্র। দিল্লির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) তরফে ঘোষণা করা হল, দেশের যে কোনও শহরের থেকে কলকাতায় অপরাধের হার অনেকটাই কম। গত কয়েক বছরেও এনসিআরবি-র রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছিল যে, কলকাতা নিরাপদতম শহর। ২০২২ সালের এনসিআরবি-র ‘ক্রাইম অফ ইন্ডিয়া’য় তার ব্যতিক্রম হল না।
আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা যতই চিৎকার করুক না কেন, এনসিআরবি-র রিপোর্টের সূত্রই জানিয়েছে যে, এই রাজ্যের সামগ্রিক অপরাধের হারও অন্যান্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই কম। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে যেখানে অপরাধের হার ৩২২, সেখানে এই রাজ্যে অপরাধের হার মাত্র ১৮২.৮। এ ছাড়াও বিজেপিশাসিত আরও অনেক রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্যে কম সংখ্যক অপরাধ ঘটেছে।
এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, জনসংখ্যার নিরিখে দেশের অন্যান্য শহরগুলিতে অপরাধের হার কলকাতায় তুলনায় অনেকটাই বেশি। ভারতীয় দণ্ডবিধি ও স্থানীয় আইনে যে অপরাধগুলি বিচারযোগ্য, সেগুলির ভিত্তিতেই এনসিআরবি তথ্য তুলে ধরেছে। তাতেই দেখা গিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কলকাতায় অপরাধের হার ৭৮.২। স্থানীয় আইনের ক্ষেত্রে এই হার ৮.৩। মোট বিচারযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে হার ৮৬.৫।
[আরও পড়ুন: শিশিরের বিরুদ্ধে CBI তদন্ত? কুণাল ঘোষের আবেদনে পালটা চিঠি অমিত শাহর]
আবার অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে সঙ্গে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হারও কলকাতায় অন্যান্য শহরের থেকে অনেকটাই কম। কলকাতায় এই হার ১.৫ মাত্র। দিল্লি, জয়পুর, লখনউ, মুম্বই, পাটনা-সহ দেশের অন্যান্য বহু শহরে অপরাধের হার ঊর্ধ্বগামী। সেখানে গত তিন বছরের পরিসংখ্যানে কলকাতায় কমেছে অপরাধের সংখ্যা। কেন্দ্রই জানিয়েছে যে, ২০২০ সালে যেখানে অপরাধের সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ২৭৭টি, সেখানে ২০২১ সালে এই সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৯১টি। ২০২২ সালে এই গ্রাফ আরও নিম্নগামী। গত বছর কলকাতায় অপরাধের সংখ্যা ১২ হাজার ২১৩টি। সেখানে দিল্লিতে গত বছর অপরাধের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৮ হাজার ৫৫৫, গুজরাটের আহমেদাবাদে ৫৩ হাজার ৮৪৫, সুরাটে ৫৫ হাজার ৩০০, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে ২৭ হাজার ১২৭, রাজস্থানের জয়পুরে ৩৬ হাজার ৯৬১, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে ১৯ হাজার ৫৮, কানপুরে ১৫ হাজার ২৬০।
এনসিআরবি-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে যেখানে কলকাতায় অপরাধের হার ৮৬.৫, সেখানে দিল্লিতে অপরাধের হার ১৯৫২.৫, গুজরাটের সুরাটে ১২০৬.১, আহমেদাবাদে ৮৪৭.৭, বেঙ্গালুরুতে ৫৪৩.৪, চেন্নাইয়ে ৪৫০.১, ইন্দোরে ১২৫১.৮, জয়পুরে ১২০২.৮, কানপুরে ৫২২.৬, কেরলের কোচিতে ১৩৫৮.২, লখনউয়ে ৬৫৬.৯, মুম্বইয়ে ৪৮৩.৯, পাটনায় ১০৪৫.১, নাগপুরে ৭৬৭.৩।