সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) কালে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ ছিল রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মহামারীর প্রকোপ কমতে থাকায় এবার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খোলা হচ্ছে। নিয়ম মেনে খুলেছে দেড়শো বছরের প্রাচীন প্রতিষ্ঠান সরকারি আর্ট কলেজে (Govt. Art College)। আর তা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রবিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠল শিল্পকলার প্রতিষ্ঠানটি। গভর্ণমেন্ট কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্টের একটি বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমতো আঁকা শিখতে পারছেন না। অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের বিক্ষোভের জেরে ক্যাম্পাসে আটকে পড়েন অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পরে অবশ্য কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হয়।
রতন আচার্য। নামী চিত্রশিল্পী। ভারতীয় শিল্পকলার সাধক হিসেবে দেশজুড়ে তাঁর নাম। গভঃ আর্ট কলেজের ‘ইন্ডিয়ান পেন্টিং’ বিভাগের স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন রতন আচার্য। ছাত্রছাত্রীরা তাঁর থেকে ভারতীয় শিল্পকলার নানা দিক শিখতে পেরেছেন। শিখেছেন ক্যানভাসে জলরং-তুলি দিয়ে জাদু তৈরি করতে। চিত্রশিল্পের ছাত্রছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ‘গুরু’ অবসর নিয়েছেন সম্প্রতি। তাঁর জায়গায় নতুন কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি ‘ইন্ডিয়ান পেন্টিং’ বিভাগে। অথচ নতুন শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের ভরতি নিয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা ভারতীয় শিল্পকলার খুঁটিনাটি শিখবেন কার কাছে? শিক্ষকই তো নেই।
তাই দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার গর্জে উঠেছেন ছাত্রছাত্রীরা। ধর্মতলা চত্বরে ভারতীয় জাদুঘরের পাশেই গভঃ আর্ট কলেজের ক্যাম্পাস তাঁদের বিক্ষোভে (Agitation)উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আটকে পড়েন প্রিন্সিপাল-সহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দাবি একটাই, রতন আচার্যের জায়গায় স্থায়ীভাবে কোনও অধ্যাপক নিয়োগ করতে হবে দ্রুতই। তা নইলে তাঁরা কিছুই শিখতে পারছেন না।
[আরও পড়ুন: পুরভোটের আগে বাড়তি দায়িত্ব অরূপ বিশ্বাসের, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বদলে ২ জেলার কো-অর্ডিনেটর]
বিক্ষোভের খবর পেয়ে স্বনামধন্য ব্যঙ্গচিত্রী উদয় দেব (Uday Deb) জানান, ”আসলে প্রত্যেক বিভাগের জন্যই স্পেশ্যালিস্ট থাকেন। তিনিই সবচেয়ে ভাল শেখাতে পারেন। কিন্তু করোনা কালে এতদিন ধরে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় এই দিকটা নিয়ে কারও ভাবার অবকাশ হয়নি। আর তাছাড়া ১৫০ বছরের পুরনো আর্ট কলেজ নিয়ে শিক্ষা দপ্তরেরও ভাবনাচিন্তা কম। তাই ছাত্র বিক্ষোভের ইস্যুটা খুবই যথাযথ বলে মনে করি।” এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্টও করেছেন।
[আরও পড়ুন: WB Civic Polls 2022: অব্যাহত জয়ের ধারা, এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিনহাটা পুরসভা দখল তৃণমূলের]
তবে দিনভর এই অশান্তির পর বিক্ষোভকারীদের আবেদন মেনে আর্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে বিকাশ ভবনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত ইন্ডিয়ান পেন্টিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে পড়ুয়াদের শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।