দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা ছিলই। সুপ্রিম রায়ে চাকরি যেতেই পাওনাদাররা রীতিমতো 'জুলুম' শুরু করেছিল বাড়িতে। চাপ সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত ক্যানিংয়ের এক শিক্ষিকার। সুইসাইড নোটের ছত্রেছত্রে সমস্যার কথা লিখেছেন তিনি। ক্ষমা চেয়েছেন বাবা-মা ও প্রেমিকের কাছে। তবে বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
সুইসাইড নোট।
জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষিকার নাম রুম্পা সিং। মেদিনীপুরের বাসিন্দা তিনি। চাকরি করতেন ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনি হাই স্কুলে। ইতিহাসের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালের প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন রুম্পা। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে একাই ক্যানিংয়ের নবপল্লি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিতেই ভেঙে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে বাড়ির মালিক বুঝতে পারেন, কিছু সমস্যা হয়েছে। এরপরই ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হন রুম্পা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। মিলেছে একটি সুইসাইড নোট। সেখানেই নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন রুম্পা।
কী রয়েছে চিঠিতে? রুম্পাদেবী লিখেছেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নিজের মতো করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। জীবনে নতুন মানুষ এসেছিলেন। মা-বাবা, প্রেমিককে নিয়ে দিব্য কাটলেও মাথায় দেনা ছিল অনেক। চাকরি যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই নাকি পাওনাদাররা বাড়িতে হামলা শুরু করেছিলেন। তাঁরা তখনই পাওনা ফেরতের দাবি করেন বলে অভিযোগ। যারা সহযোগিতা করার চেষ্টা করে তাঁদেরও অভিযুক্তরা হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। একে চাকরি হারানোর যন্ত্রণা, তার উপর পাওনাদারের চাপ, সবমিলিয়ে প্রবল মানসিক চাপে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চিঠিতে লিখে গিয়েছে কয়েকজনের নাম ও ফোননম্বর। প্রসঙ্গত, বছর খানেক আগেও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন রুম্পা।