স্টাফ রিপোর্টার: ধৃত আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে বিজেপির শীর্ষনেতার স্পষ্ট যোগাযোগের অভিযোগ। নওশাদের সঙ্গে বিজেপির এক শীর্ষনেতার হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) চ্যাটে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওয়ালার টাকার লেনদেন-সহ বেশ কিছু অনিয়ম সামনে এসেছে। এদিন আলিপুর বডিগার্ড লাইনে পুলিশ কমিশনার (CP)বিনীত গোয়েল জানান, যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি হাতে এসেছে, সেগুলির ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। ধর্মতলায় গ্রেপ্তারির পর হাতিশালায় সংঘর্ষের তদন্তে ফের নওশাদ সিদ্দিকি ও এক মহিলা সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। শুক্রবার জেল থেকে বারুইপুর আদালতে দু’জনকে পেশ করা হবে।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির এক শীর্ষনেতা-সহ একাধিক নেতার সঙ্গে চ্যাট হয় আইএসএফ নেতা নওশাদের (Nowsad Siddique)। এমনও কিছু ইঙ্গিত মিলেছে যে, নওশাদকে এক বিজেপির (BJP) শীর্ষনেতা বলেছেন ভোটের আগে ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এই রাজ্যের কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিষয়টি উপস্থাপনা করবেন। তারই ভিত্তিতে ভোটের আগে আধিকারিকদের সরানো হবে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। ফলে ভোটের আগে যে প্রশাসনিক ও পুলিশকর্তাদের সরানো হয়, তার পিছনে নওশাদের ‘সুপারিশ’ রয়েছে কি না, তা লালবাজারের গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রকে চাপ, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে আবাস যোজনায় বাড়তি ‘কোটা’ চাইল রাজ্য]
লালবাজারের (Lalbazar)এক আধিকারিক জানান, তাঁদের কাছে প্রমাণ মিলেছে যে, একাধিক রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট হয়েছে নওশাদের। যেহেতু বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির যে কেন্দ্রীয় নেতা বা নেতারা এই রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের দিকেই উঠেছে অভিযোগের আঙুল। তাঁদের মধ্যে এক শীর্ষনেতার সঙ্গে চ্যাটগুলি ঘিরে বেশি সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ভোটের আগে হাওয়ালার মাধ্যমে নওশাদ তথা আইএসএফের কোটি কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণ গোয়েন্দা পুলিশ পেয়েছেন। ওই টাকা বিদেশ থেকে কারা পাঠিয়েছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। এমনকী, বিজেপির কোনও সূত্রের মাধ্যমে সেগুলি এসেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা ভোটের আগে আধিকারিকদের সরানোর জন্য ব্যবহার হয়েছে কি না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, নওশাদের বেশ কিছু চ্যাট মুছে ফেলা হয়েছে। আবার অচেনা কিছু নম্বরেও হয়েছে চ্যাট। তাই আরও চ্যাট উদ্ধার ও যাঁদের সঙ্গে নওশাদের যোগাযোগ, তাঁদের ব্যাপারে নিশ্চিত হতেই নওশাদ সিদ্দিকির দু’টি মোবাইলই বৃহস্পতিবার পুলিশ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চালাচালি হয়েছে। তদন্তে সব তথ্য সামনে আসবে। ধর্মগুরুর সত্তাকে কেউ যেন অন্য কাজে ব্যবহার না করে। আইএসএফের সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতার পিরিত নিয়ে তদন্ত করা উচিত।’’
[আরও পড়ুন: জনসংযোগে আরও জোর, কুণাল ঘোষের হাত ধরে ‘অঞ্চলে একদিন’ কর্মসূচি শুরু তৃণমূলের]
বিজেপি (BJP) নেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিধানসভায় আমাদের মুখ্য সচেতকের সঙ্গেও নওশাদের কথা হয়। অন্য কেউ কথা বলে থাকলে বেশ করেছে। বিজেপির শীর্ষনেতারা নিশ্চয়ই বলেছেন, মানুষকে পথে নামাও, প্রতিবাদ করো।’’ এদিকে, নওশাদের সচিব মালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।