সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরজিতে সায় আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতের। পার্থকে কথা বলতে দিলেন বিচারক। নিয়োগ দুর্নীতিতে কোনওভাবেই তিনি যুক্ত নন বলেই সওয়াল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশও করেন। এদিন তাঁকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতের বিচারক।
এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে সপক্ষে অনেক কথাই বলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, “সবাই ছিল বোর্ডের মধ্যে। আমি বোর্ডের প্রধান ছিলাম। আমি নিয়োগকর্তা নই। একজন প্রশ্ন করতেন, আরেকজন খাতা দেখতেন। আমি মন্ত্রী ছিলাম। আমি নিজেের দায়িত্ব পালন করেছি। মন্ত্রী হওয়া কি অপরাধ? আমি পড়াশোনায় ভাল। ভাল পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি। বিরোধী দলনেতাও ছিলাম। থানায় আমার নামে কোনও মামলা নেই। জামিন পেলে পালিয়ে যাব না। চার্জশিটে এমন কোনও অভিযোগ আমার নামে নেই। সরকারি আইনজীবী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হয়ে কথা বলছেন।” পালটা বিচারক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলেন, “কেস ডায়েরির কথা বলবেন না। কেস ডায়েরি দেখে যে কেউ লজ্জায় পড়ে যাবেন।”
[আরও পড়ুন: কলেজে সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর ‘অবৈধ’ চাকরি! টুইট করে নথি প্রকাশ্য আনল তৃণমূল]
খানিকটা অভিমানের সুরে পার্থ বলেন, “৮ মাস ধরে গুহার মধ্যে আছি। নিজেই অবাক হচ্ছি। আগে বাড়ি থেকে যখন বেরতাম আমাকে তখন অনেকে বলতেন, কোথায় যাচ্ছিস? পাথরে মাথা ঠুকতে যাচ্ছিস? পাথর দিয়েই প্রতিমা তৈরি হয়।” কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন পার্থ। তাঁর আক্ষেপ, “আমার ৭০ বছর বয়স। যেভাবে তদন্ত এগোচ্ছে, তাতে জীবদ্দশায় হয়তো রায় দেখে যেতে পারব না। একদিন সত্যি সামনে আসবেই।” তবে বিচারব্যবস্থার উপর এখনও তাঁর আস্থা রয়েছে বলেই জানান পার্থ।
এরপর আলিপুর বিশেষ আদালত থেকে বেরনোর সময়েও মুখ খোলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগকর্তা নন বলেই ফের দায় এড়ান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “যারা নিজেরা কালি মেখে আছে। তারা আবার কী কালিমালিপ্ত করবে?” শেষমেশ একই কথা পার্থর, “দলের সঙ্গে আছি। আছি। আছি।” বৃহস্পতিবার আদালতে ঢোকার মুখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর নাম শোনা যায়। তার মাত্র ১৮ মিনিট আগে ওই তিনজনের কথা উল্লেখ করে টুইট করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তারপরই পার্থর মন্তব্যে নয়া জল্পনা দানা বাঁধে। আবার আদালত থেকে বেরনোর সময় পার্থর তৃণমূলের সঙ্গে থাকার বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।