গোবিন্দ রায়: ফুটবলের রাজপুত্র লিওনেল মেসির কলকাতা সফর ঘিরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থেকেছেন শহরবাসী। এবার সেই ঘটনার জল গড়াল আদালতের দোরগোড়ায়। যুবভারতী স্টেডিয়ামের অশান্তি (Chaos at Yuba Bharati) নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। মঙ্গলবার শুনানির সম্ভাবনা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলার তদন্তে রাজ্য সরকারের তৈরি SIT-কে চ্যালেঞ্জ করেও আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানি হতে পারে।
গত ১৩ ডিসেম্বর, শনিবার মেসির সফরে কার্যত নজিরবিহীন অশান্তির ছবি উঠে এসেছে। সল্টলেক স্টেডিয়ামে 'ফুটবল ঈশ্বর'কে একবার দেখার জন্য সাধ্যাতীত চড়া দামে টিকিট কেটেছিলেন মেসিভক্তরা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে দেখা গেল, মেসি মাঠে ঢুকলেও তাঁকে ঘিরে ভিআইপি-দের এতটাই ভিড় যে ফুটবলারের অবয়বটুকুও দেখা যায়নি। ফলে জনবিক্ষোভ নিমেষের মধ্যে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটায় যুবভারতীতে। দামি টিকিট থাকা সত্ত্বেও প্রিয় ফুটবলারকে দেখতে না পেয়ে মাঠের ভিতরে ঢুকে পড়ে উন্মত্ত জনতা তাণ্ডব চালায়। চেয়ার ভাঙচুর, জলের বোতল ছোড়া, ব্যানার-পোস্টার টেনে খুলে ফেলার মতো অপ্রীতিকর সমস্ত ঘটনা ঘটে যায় কয়েক মুহূর্তের মধ্যে। এর দায় গিয়ে বর্তায় উদ্যোক্তা সংস্থার উপর। সেসময় মেসির সঙ্গে হায়দরাবাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত। জনরোষ সামলাতে তাঁকে দমদম বিমানবন্দর থেকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। পরে সিআইএসএফের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়। আপাতত শতদ্রু ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
কলকাতার ময়দানে এমন এক ঘটনার নিন্দায় সরব সবমহল। এবার সেই জের গড়াল আদালতে। জানা গিয়েছে, সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে যুবভারতী কাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের আবেদন জানান আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। তাঁকে মামলা দায়েরের অনুমতি দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল। মঙ্গলবার শুনানি হতে পারে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।
অন্যদিকে, এই বিশৃঙ্খলার তদন্তে রাজ্য সরকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে যে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছিল, তাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়েরের আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি সম্ভাবনা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে। আবার এই ঘটনায় আমজনতার আর্থিক লোকসানের বিষয়টি তুলে ধরে ইডিকে দিয়ে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন আরেক আইনজীবী মৈনাক ঘোষাল। তাঁর আবেদন, তছনছ হয়ে যাওয়া যুবভারতী মেরামত যেন আয়োজক সংস্থার অর্থেই করা হয়, টিকিটের মূল্য সকলকে ফেরত দেওয়া হয় এবং আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চলে। এনিয়েও পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে।
