shono
Advertisement
Bypass Murder Case

PA থেকে প্রেমিকা, বাইপাসে নিহত তরুণীর সঙ্গে স্বামীর ঘনিষ্ঠতা জেনে আত্মহত্যার চেষ্টাও করে ব্যবসায়ীর স্ত্রী!

প্রায়ই নিজের দামি গাড়িতে চড়িয়ে প্রেমিকাকে নিয়ে বেড়াতে যেতেন ব্যবসায়ী।
Published By: Sayani SenPosted: 05:04 PM Feb 01, 2025Updated: 07:40 PM Feb 01, 2025

অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: বাইপাসে বাবার প্রেমিকাকে খুন কাণ্ডে পরতে পরতে রহস্য। ইতিমধ্যে নাবালক, তার মা-সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে যাকে কেন্দ্র করে এমন হাড়হিম করা কাণ্ড, যার সঙ্গে তরুণীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল - তার খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনও। যদিও তিনি অভিযুক্ত নন। তবে জানা গিয়েছে, বছর চব্বিশের নিহত তরুণী রাফিয়া সাকিল শেখ ব্যবসায়ী ফারুকি আনসারির আপ্তসহায়ক ছিলেন। সেই সুবাদে দুজনে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়াই কাল হল তরুণীর।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী শাহজাদি আনসারি ও চার সন্তানকে নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের কলিন লেনের ফ্ল্যাটে থাকেন ঝাড়খণ্ডের গিরিডির আদি বাসিন্দা মহম্মদ ফারুকি আনসারি। গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে তাঁর। খুনে যার দিকে অভিযোগের তির, ফারুকির সেই বড় ছেলে স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। বাবার ব্যবসাও দেখত সে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ফারুকির অফিসে তাঁর আপ্তসহায়কের কাজ করতেন রাফিয়া। তখন থেকে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। স্ত্রী শাহজাদি বিষয়টি জানার পর রাফিয়াকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে কাজ ছাড়লেও ওই তরুণীর সঙ্গে ফারুকির যোগাযোগ ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই যোগাযোগ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে দু'জনের মেলামেশাও। প্রায়ই নিজের দামি গাড়িতে চড়িয়ে প্রেমিকাকে নিয়ে ফারুকি এদিক-সেদিকে যেতেন। একটি সূত্রের খবর, নিহত রাফিয়া ইদানিং অন্য একটি অফিসে চাকরি করতেন। এই তথ্য পুলিশ যাচাই করছে।

নিহত রাফিয়া সাকিল শেখ নামে ওই তরুণীর স্বামী আই টি সেক্টরে চাকরি করেন। চার বছর আগে দুজনের বিয়ে হয়েছে। আগে পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙা থানা এলাকায় থাকত ওই পরিবার। বিয়ের পরই তাঁরা উত্তর শহরতলির নারায়ণপুরের ফ্ল্যাটে উঠে যান। বৃহস্পতিবার রাফিয়া তাঁর স্বামীকে বলেন, তপসিয়ায় তাঁর 'নানি'র বাড়িতে যাবেন। স্বামী তাঁকে স্কুটারে করে কাছাকাছি পৌঁছে দেন। তারপর রাফিয়া যোগাযোগ করেন প্রেমিক ফারুকির সঙ্গে। বাড়ি লাগোয়া অফিসে বসে ফোনে কথা বলতে থাকেন প্রেমিকার সঙ্গে। তার সঙ্গে চলতে থাকে বিকেলের পর দু'জন মিলে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা। স্বামীর কথার হাবেভাবে সন্দেহ হয় স্ত্রীর। আর তার পরই শুরু হয় পারিবারিক গোলমাল। স্ত্রী শাহাজাদি ফিনাইল খাবেন বলে চিৎকার করতে থাকেন। ফারুকি রুদ্রমূর্তি ধরে বাড়ি থেকে ফরচুনা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরই মাঠে নামে ফারুকি-শাহাজাদির নাবালক ছেলে। এদিন তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় বলে ধৃত ওই কিশোর পুলিশকে জানিয়েছে। কম্পিউটার থেকে জিপিএস ট্র্যাক করে ছেলে জানতে পারে যে, গাড়ি নিয়ে বাইপাসেই ঘুরছে বাবা। আর তখনই 'এসপার, না হয় ওসপার'-এর ছক সাজায় ছেলে, মা ও ছেলের এক কাকা। পকেটে কাগজ কাটার ছুরি রেখে দেয় কিশোর ছেলেটি।

শাহাজাদি তাঁর ছেলে ও এক দেওর আক্রামকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িরই অন্য একটি গাড়ি করে জিপিএস ট্র্যাকার দেখে পৌঁছে যান বাইপাসে মেট্রোপলিটনের কাছে একটি 'টি শপ'-এ। আর সেখানেই প্রায় ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ফারুকি আর ওই তরুণীর দেখা পায় মা ও ছেলে। হাতেনাতে ফারুকিকে ধরে চিৎকার করতে থাকেন শাহাজাদি। চলে গালিগালাজও। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে কিশোর ও তার ওই কাকাও। ঝামেলা চলার মধ্যেই পালানোর চেষ্টা করেন তরুণী রাফিয়া। বাবার প্রেমিকাকে পালাতে দেখেই তাকে তাড়া করে ওই কিশোর। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ওই তরুণীকে ধরে ফেলে ছুরি নিয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই কিশোর। পুলিশের দাবি, এদিন কিছু কারণে তরুণীর ময়নাতদন্ত হয়নি। শনিবার ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে কতগুলি আঘাত তার দেহে রয়েছে। ওই অবস্থা দেখে এক পথচারী পুলিশকে খবর দেন।

অন্য কয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে তাঁর স্বামী ও পরিবারের অন্যরা হাসপাতালে পৌঁছন। এদিকে ঘটনাীর অভিঘাতে ওই টি শপে জড়ো হওয়া লোকজনই হামলাকারী কিশোর, তার মা ও কাকাকে ধরে ফেলেন। বেগতিক বুঝে ফারুকি পালিয়ে যান। যে গাড়ি করে অভিযুক্তরা এসেছিল, তার চালকও পলাতক। গাড়িগুলি পুলিশ আটক করেছে। উদ্ধার হয়েছে রক্তাক্ত ছুরি। এদিন নিহত রাফিয়ার শাশুড়ি ও ভাসুর জানান, রাফিয়া ও তাঁর স্বামীর মধ্যে খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল। তাঁদের মধ্যে কোনও গোলমাল ছিল না। অবশ্য রাফিয়া এমন কোনও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন না বলেই তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাইপাসে বাবার প্রেমিকাকে খুন কাণ্ডে পরতে পরতে রহস্য।
  • বছর চব্বিশের নিহত তরুণী রাফিয়া সাকিল শেখ ব্যবসায়ী ফারুকি আনসারির আপ্তসহায়ক ছিলেন। সেই সুবাদে দুজনে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
  • প্রায়ই নিজের দামি গাড়িতে চড়িয়ে প্রেমিকাকে নিয়ে বেড়াতে যেতেন ব্যবসায়ী।
Advertisement