গৌতম ব্রহ্ম ও অর্ণব আইচ: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হাফিজুল মোল্লার প্রবেশের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। দফায় দফায় চলছে বৈঠক। এই ঘটনার পরই নবান্নে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে জারি করা হল নিষেধাজ্ঞা। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবনের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।
বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকেন। তার ফলে নিরাপত্তার কাজে গাফিলতি দিচ্ছেন তাঁরা। সেই সমস্যার কথা মাথায় রেখে এবার থেকে নবান্নে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা আর মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। ডিউটি শুরু হওয়ার আগে তাঁদের মোবাইল জমা রাখতে হবে। অন্যান্য সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম লাগু হতে পারে বলেই জানা গিয়েছে।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) কালীঘাটের বাসভবনের নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। আগে মমতার বাড়ির সামনে ৭০ জন পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতেন। তবে হাফিজুল মোল্লার প্রবেশের ঘটনার পর এবার এক একটি শিফটে ১৮ জন করে নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে ৭০-এর পরিবর্তে এবার থেকে ৮৮ জন পুলিশকর্মী এক একটি শিফটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। তিনটি বাড়তি পুলিশ পিকেট মোতায়েন করা হয়েছে। বাঙ্কার রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ইতিমধ্যে সিসিটিভি রয়েছে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি প্রত্যেকটি অলিগলিতে সিসিটিভির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাঁচিল উঁচু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাড়ির পিছনে ওয়াচ টাওয়ার তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আগুন নিয়ে খেলা করা ঠিক নয়’, নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারির দাবিতে ফের সরব মমতা]
উল্লেখ্য, শনিবার গভীর রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের (Kalighat) বাসভবনে নিরাপত্তারক্ষীদের অজান্তে প্রবেশ করে হাফিজুল মোল্লা নামে ওই যুবক। রবিবার সকালে তাকে একটি গাড়ির পিছনে বসে থাকতে দেখা যায়। এরপরই সতর্ক হয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। দুপুর সোয়া দু’টোয় রাজ্যের ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটির এক ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের করা অভিযোগের ভিত্তিতে হাফিজুল মোল্লাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৮ ধারায় কাউকে আঘাত বা হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও বাড়িতে অনুপ্রবেশ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কালীঘাট থানার পুলিশ।
সোমবার ৩১ বছর বয়সি হাফিজুলকে (Hafijul Mollah) আলিপুর আদালতে তোলা হয়। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। ১১ জুলাই পর্যন্ত ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশের অভিযোগ, অভিযুক্তর কাছ থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার হয়েছে। ফলে তার নাশকতা বা হামলার উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগেও হাফিজুল নবান্নের নিরাপত্তা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল। তখন তাকে আটক করে হাওড়ার শিবপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।