সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। আর সে কারণে আর জি কর ধর্ষণ ও খুন মামলায় শিয়ালদহ আদালত জামিন পেয়েছেন সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল। দুজনের জামিনের বিরোধিতায় সরব রাজনৈতিক মহল। সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, "সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ৯০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তাই জামিন পেয়ে গেল ২জন। সিবিআই তদন্ত মানেই বিচার পেয়ে গিয়েছি তা নয়। ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে নিতে হবে। কেন তারা ধর্ষণ ও খুন মামলায় চার্জশিট দিতে পারল না, তার জবাব দিতে হবে। সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে সিবিআই। এবার রাজ্য ধর্ষক-খুনির মুক্তাঞ্চল হয়ে যাবে। বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিক নাগরিক সমাজ।" আদালতের এই রায়ের পরই অতি দ্রুত জিবি মিটিংয়ে বসছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবারের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়া-ও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "শুধু আমাদের নয়, ব্যর্থতার জবাব অভয়া দিদি, তাঁর বাবা-মা, গোটা রাজ্যবাসীকে দিতে হবে। সিবিআইয়ের ঢিলেমির তীব্র বিরোধিতা করি।" নাগরিক সমাজের কাছে তাঁর একটাই অনুরোধ, "রাজপথ ছাড়বেন না।"
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনায় প্রথমে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর ধর্ষণ ও খুনের মামলার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। সিবিআই ঘটনার তদন্তভার পায়। তদন্তে নামার পর একাধিকবার সন্দীপ ঘোষকে জেরা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর জি করের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন এবং আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত জোড়া মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে।
আর জি কর কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। ওই চার্জশিটে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে মূল অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখও করা হয়। তবে সন্দীপ ঘোষ কিংবা অভিজিৎ মণ্ডল ঠিক কীভাবে যুক্ত ছিলেন এই মামলায়, সে বিষয়ে চার্জশিটে সিবিআইয়ের তরফে সুস্পষ্টভাবে কিছু উল্লেখ নেই। সে কারণেই শুক্রবার শিয়ালদহ আদালত সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে জামিন দেয়। ২ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছেন তাঁরা।