অভিরূপ দাস: বিশ বছর ধরে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় স্টল দিচ্ছেন। এমন প্রকাশকদের স্টল আচমকাই বন্ধ হতে পারে এবার। কারণ? তাঁরা টিকা নেননি। নেবেনও না। স্টল দিতে গেলে গিল্ডের ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাতে সাফ লেখা, টিকার দু’টি ডোজের শংসাপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এদিকে টিকাহীন প্রকাশকদের সাফ জবাব, ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক নয়, তাই নিইনি।
১৯৯৬ সাল থেকে বইমেলায় (Book Fair) স্টল দিচ্ছে ‘এখন বিসংবাদ’ প্রকাশনা। সে প্রকাশনার কর্ণধার বাসুদেব ঘটক টিকার একটি ডোজও নেননি। আসন্ন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় স্টল দিচ্ছে বাসুদেববাবুর সংস্থা। টিকা নিলেন না কেন? এমন প্রশ্নে বাসুদেব ঘটক জানিয়েছেন, টিকা বাধ্যতামূলক নয়। টিকা নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্র কাউকে বাধ্য করতে পারে না। রাজ্য সরকার স্টল বন্ধ করে দিলে আইনত তার মোকাবিলা করবেন বলেও জানিয়েছেন টিকাহীন প্রকাশকরা।
[আরও পড়ুন: Omicron in West Bengal: বেলেঘাটা আইডি ছাড়া শহরের আরও ন’টি বেসরকারি হাসপাতালে হবে ওমিক্রনের চিকিৎসা]
ফি বছর বইমেলায় অগুনতি মানুষের ভিড় হয়। এই মুহূর্তে করোনার ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এমতাবস্থায় কীভাবে প্রকাশকরা টিকা না নিয়ে স্টল দিতে পারছেন? প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। পিয়ারলেস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ডা. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, বইমেলায় বিপুল জনসমাগম হয়। করোনা আবহে (Corona Pandemic) এত মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তার পরেও কিছু প্রকাশক টিকা না নিয়ে ভিড়ে ভিড়াক্কার ময়দানে স্টল দেবেন! এটা সমাজের কাছে অত্যন্ত খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সংগঠকদের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
কেন আটকাচ্ছে না পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড? ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “কোভিড প্রোটোকল অনুযায়ী যা বলার তা আমরা প্রকাশকদের বলেছি। তারপর যদি কেউ তা না মানেন সেটা প্রশাসন দেখবে। আমাদের কাজ হচ্ছে নিয়মটা জানানো। সেটা বলবৎ করার দায়িত্ব প্রশাসনের।” যে সমস্ত প্রকাশক টিকা নেননি, তাঁদের দাবি, টিকা নিয়েও করোনা হচ্ছে। শুধুশুধু টিকা নিয়ে লাভটা কী? ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ডা. কৌশিক চাকির কথায়, অজ্ঞতার কারণে এহেন কথা বলছেন কিছু প্রকাশক। যাঁরা করোনার টিকা নেননি, তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের চেয়ে অনেক বেশি। যদি টিকা না নেওয়া হয়, তাহলে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে না। ফলে, করোনা নির্মূল করার বিষয়টি অনেক পিছিয়ে যাবে। রাজ্য সরকারের উচিত বইমেলায় স্টল খোলার জন্য টিকা বাধ্যতামূলক করা। গিল্ড জানিয়েছে, বইপ্রেমীরা মাস্ক ছাড়া বইমেলায় ঢুকতে পারবেন না। স্যানিটাইজারের উপরও জোর দিচ্ছেন গিল্ড কর্তৃপক্ষ।