অর্ণব আইচ: চিটফান্ড মামলায় নাম উঠে আসার পর নাম ভাঁড়িয়ে ‘আরমান গঙ্গোপাধ্যায়’ হন গোপাল দলপতি। ‘আরমান’ নামেই গোপাল তৈরি করেন যাবতীয় পরিচয়পত্র। সেই আধার কার্ড, প্যান কার্ড-সহ যাবতীয় পরিচয়পত্র এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হাতে। এদিকে, এসএসসি (SSC) মামলায় মঙ্গলবার মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল ও মানিকের স্ত্রী, ছেলে ফের হাজিরা দেবেন ব্যাঙ্কশালের বিশেষ ইডি আদালতে।
ইডি জানিয়েছে, হুগলির (Hooghly) ধৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের মুখে তাপস মণ্ডলের সঙ্গে সঙ্গে উঠে এসেছিল গোপাল দলপতির নামও। কুন্তলের দাবি ছিল, তিনি গোপালকে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছেন। যদিও গোপাল ইডির কাছে তা অস্বীকার করেন। জেরার সময় ইডি আধিকারিকরা তাঁর পরিচয়পত্র দেখতে চান। গোপালের পরিচয়পত্র দেখেই আঁতকে ওঠেন গোয়েন্দারা। কারণ, পরিচয়পত্রগুলিতে গোপালের নামই ছিল না। তার বদলে ছিল আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। গোপাল ইডিকে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে চিটফান্ডের অভিযোগ ওঠার পর থেকে সেবি (SEBI)তাঁর যাবতীয় অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়।
[আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনা থেকে এল উপহার, মেসির জার্সি হাতে পেলেন মোদি ও জয়শংকর]
তাঁর পক্ষে গোপাল দলপতি নাম নিয়ে কোনও সংস্থা বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাও সম্ভব ছিল না। তাই গোপাল নাম ভাঁড়িয়ে পরিচয় গোপন করতেই আদালতে গিয়ে এফিডেফিট করে ‘আরমান গঙ্গোপাধ্যায়’ নাম নেন। সেই নামে কাপড়ের ব্যবসা খোলেন। যদিও ইডি আধিকারিকদের মতে, নাম ভাঁড়িয়ে একাধিক সংস্থা খুলে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতে সাহায্য করেন তিনি। ইডির কাছে গোপাল দলপতির দাবি, অন্তত ১০০ কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। তিনি ও মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল আসলে পূর্ব মেদিনীপুরে (East Midnapore) একই এলাকার বাসিন্দা। তদন্তে ইডি জেনেছে, প্রথমে ‘আরমান’ নামে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলেও তা ভাল চলছিল না। তাই তাপস মণ্ডলের শরণাপন্ন হন গোপাল। গোপাল তাঁকে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে বলেন।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বড়সড় হামলা, ১৪টি মন্দিরে ভাঙচুরের অভিযোগ]
এছাড়াও তাঁর সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা পাচারের ছক কষা হয়। সেই কারণেই তাপস গোপাল তথা আরমানকে নিয়ে যান হুগলির কুন্তল ঘোষের কাছে। ইডির কাছে গোপালের দাবি, তাঁর সামনেই ৯৪ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছিল। আবার কুন্তলও তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা, তাঁর এক ‘কাকু’র হাতে টাকা দিতে হবে বলে দাবি করতেন কুন্তল। যদিও ওই ব্যক্তিটি আসলে কে, তা গোপাল জানতেন না বলে ইডি আধিকারিকদের জানান গোপাল। বিষয়টি ইডি যাচাই করছে। গোপাল যে শিক্ষক নিয়োগে এজেন্টের কাজ করতেন, তা তাঁকে জেরা করার পরই ধারণা ইডির। কারণ গোপাল স্বীকার করেন যে, তিনি কমিশন হিসাবে লাখ তিনেক টাকা নিয়েছিলেন। ওই টাকা সংক্রান্ত বিষয়ে গোপালকে ফের জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে ইডি।