সুব্রত বিশ্বাস: গার্ড নয়, হাওড়া (Howrah) ডিভিশনে লোকাল ট্রেন চালিয়ে নিয়ে গেলেন ট্রাফিক ইনস্পেক্টর আর স্টেশন মাস্টাররা! রবিবার এমন ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ডিভিশনের অপারেশন বিভাগের কর্তাদের নির্দেশে ট্রেন চালানোর এই নীতিতে যাত্রী সুরক্ষা (Passengers’ safety) নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। রোড লার্নিং না থাকা সত্বেও কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাওড়ার গার্ডরা (Rail Guard)।
অল ইন্ডিয়া গার্ড কাউন্সিলের হাওড়ার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সাহা বলেন, ”ট্রেনের কোন সুইচের কী কাজ, ট্রেনে আগুন লাগলে কী কর্তব্য, যাত্রী নামা-ওঠা থেকে সিগন্যাল অবজ্ঞা করলে, দুর্ঘটনা ঘটলে গার্ডের যে গুরু দায়িত্ব সে সম্পর্কে ট্রাফিক ইনস্পেক্টরদের কোনও ধ্যান-ধারণা নেই। হাজার হাজার যাত্রীদের বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে রেল।” অভিযোগ, রবিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লোকাল, ১০ টা ৩৫-এর গোঘাট লোকাল, ১১ টা ৪২-এর পাণ্ডুয়া লোকাল-সহ অসংখ্য ট্রেনে গার্ডের বদলে ট্রাফিক ইনস্পেক্টরদের (Traffic Inspector) দিয়ে চালানো হয়েছে। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার প্রভাস দানসানা জানান, হাওড়ার এই বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
অপারেশন বিভাগের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানা গিয়েছে, শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যাতে গার্ডদের একটানা ১০ ঘন্টা ১৫ মিনিট কাজ করতে হবে। হাওড়ার গার্ডদের অভিযোগ, রেলের নির্ধারিত ‘আওয়ার অফ এমপ্লয়মেন্ট রেগুলেশন’ আইন উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া ডিভিশন। আইনে বলা হয়েছে, টানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। কাজের শেষে ১৬ ঘন্টার বিশ্রাম। তাঁদের অভিযোগ, যেহেতু গার্ডদের, নির্ধারিত দিনে সাপ্তাহিক ছুটি নেই। তাই তাঁদের ট্রেন চলানোর উপর নির্ভর করে নির্ধারিত ছুটি ও বিশ্রাম ঠিক হয়। যার তোয়াক্কা না করে ডিউটি রোস্টার (Duty Roaster) তৈরি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতের ভাল হোক’, ‘অপারেশন দোস্ত’-এর জন্য ভারতকে দু’হাত ভরে আশীর্বাদ তুরস্কবাসীর]
এনিয়ে সোমবার রেলের কর্মী সংগঠন ও গার্ড কাউন্সিল বিভিন্ন দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবে রেল। রবিবার থেকে নতুন নির্দেশিকা চালুর পর মানেননি গার্ডরা। পুরোনো নিয়মেই তারা এদিন কাজ করেন। গার্ডদের এই প্রতিবাদকে গুরুত্ব দেয়নি রেল। হাওড়ার গার্ডদের ছাড়াই বহু ট্রেন চালানো হয় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দিয়েই। এনিয়ে পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার প্রভাস দানসানা জানান, এখন বহু কিছু কার্যকর হচ্ছে। বিশ্রামের ন্যূনতম সময় যা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়ার পর কর্মীদের কাজ করানো হবে। ব্যয় কমিয়ে আয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এটা।