অরিজিৎ গুপ্ত: একটা দিন হোমওয়ার্ক করেনি ছোট্ট ছেলেটি। তার শাস্তি যে এভাবে পেতে হবে, তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি সে। কিন্তু বাস্তব তো সম্পূর্ণ আলাদা। তাই গায়ে গরম মোমের তাপ সইতে হল তাকে। নৃশংস ঘটনার সাক্ষী হাওড়ার (Howrah) গোলাবাড়ি এলাকা। ঘটনা নিয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
এই মুহূর্তে রাজ্যে স্কুল বন্ধ। ফলে বাড়িতে পড়াশোনাই একমাত্র পথ। সালকিয়ার এক ফুল বিক্রেতার তিন ছোট ছেলেমেয়ে স্থানীয় গৃহশিক্ষক দীপক প্রজাপতির কাছে পড়ত। ঘটনা গত ১৪ আগস্টের। ওই গৃহশিক্ষক সন্ধেবেলায় ফুল ব্যবসায়ীর বাড়িতে পড়াতে যান। সেসময় বাড়িতে ছাত্রছাত্রীর বাবা-মা ছিলেন না। দ্বিতীয় শ্রেণির ছেলেটি দাদা এবং দিদির সঙ্গে পড়তে বসে। ‘স্যর’ বাচ্চাটিকে পড়া ধরলে সে বলতে পারেনি। তাতেই উত্তেজিত হয়ে যান দীপক। অভিযোগ, এরপরই মোমবাতি জ্বেলে গরম মোম (burning candle)ওই ছাত্রের গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ঢেলে দেয়। এর পাশাপাশি শরীরে গরম হাতা দিয়ে ছ্যাঁকা দেয় বলে অভিযোগ। তার হাতে, পায়ে, পিঠে ফোসকা পড়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ভুয়ো আইনজীবী পরিচয় দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতানোর অভিযোগ, কলকাতায় ধৃত বিজেপি নেত্রী]
এরপর তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। ১৯ আগস্ট গৃহশিক্ষক (Private Tutor) গৃহশিক্ষক দীপক প্রজাপতির নামে গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তারপর তাঁর ও তাঁর ছেলের বয়ানও রেকর্ড করা হয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রের মা। কিন্তু তারপরও গৃহশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে।
[আরও পড়ুন: খুন নাকি আত্মহত্যা? পার্ক সার্কাসের হোটেলে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর কারণে ধোঁয়াশা]
তাতেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় শিশুটির মা এদিন হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারের (CP, Howrah) সঙ্গে দেখা করেন। কমিশনারের নির্দেশে গোলাবাড়ি থানা পুলিশ নড়েচড়ে বসে। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি অভিযুক্ত। শোনা গিয়েছে, দীপক প্রজাপতি ফেরার। ছাত্রের মায়ের অভিযোগ, পুলিশ তখনই ‘স্যর’কে গ্রেপ্তার করলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেতেন না। ঘটনায় অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। তবে গলন্ত মোমের ক্ষত এখনও দগদগে ছোট্ট ছাত্রের শরীরে।