স্টাফ রিপোর্টার: জল জীবন মিশনের বাংলার কর্মসূচি নিয়ে বিরোধী দলনেতার তোলা দুর্নীতির অভিযোগ পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য বলে তথ্য দিয়ে পালটা দাবি করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) অভিযোগ করেন, এই মিশনে ফেরুল কেনা নিয়ে ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও প্রামাণ্য তথ্য এবং প্রমাণ শুভেন্দু হাজির করতে পারেননি বলে পালটা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে নবান্ন।
শুধু তাই নয়, গত ২ অক্টোবর দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে (Vigyan Bhawan) জলজীবন মিশন প্রকল্প বাস্তবায়নে উৎকর্ষতার জন্য ভারত সেরার পুরস্কারও এ রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তরের হাতে তুলে দেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখওয়াত। এখানেই শেষ নয়, একের পর এক কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া বিরোধী দলনেতা যে জল জীবন মিশন (Jal Jiban Mission) নিয়ে বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার একটি ভিডিও এদিন দপ্তরের তরফে সাংবাদিকদের দেখানো হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ছট পুজোর দিন একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন শুভেন্দু। মাত্র দশদিনেই দুর্নীতির অঙ্কের পরিমান ৪০০ কোটি টাকা কমিয়ে ৫০০ কোটি হয়েছে! বিষয়টির উল্লেখ করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা পালটা অভিযোগ করেছেন, “একের পর এক নির্বাচনে গো-হারা বিরোধী দলনেতা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, রাজনৈতিক মিথ্যাচার করে প্রশাসনকে বিপাকে ফেলে সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকতে চাইছেন।” নারদ (Narada Scam) কান্ডের কথা উল্লেখ করে শুভেন্দুকে নিশানা করে শশী পাঁজা আরও বলেন, “কাকে যেন টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। ক্যামেরায় যে দুর্নীতি ধরা পড়েছে আগে তার তদন্ত চাই। তার তলব চাই।’’
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ভারতীয় পড়ুয়ারা পড়াশোনা শেষ করুক রাশিয়ায়, ‘বন্ধু’ ভারতকে প্রস্তাব মস্কোর]
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জল জীবন মিশন প্রকল্পে এ রাজ্যে টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। নলবাহিত জলের ট্যাপের মুখে যে ফেরুল লাগে সেটাতে ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। হাওড়ায় চারটি সংস্থার নাম করেও অভিযোগ করেছেন তিনি। দুর্নীতির তদন্ত দাবি করে সোমবার কেন্দ্রীয় জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠিও দেবেন বলে জানিয়েছেন। সাতদিনের মধ্যে তদন্ত না হলে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু।
[আরও পড়ুন: মুক্তি পেয়ে গেল রাজীব হত্যায় দোষী নলিনী-সহ ৬, সাজা মকুব সুপ্রিম কোর্টের]
নবান্নর তরফে বলা হয়েছে, টার্গেট রয়েছে ১ কোটি ৮০ লক্ষ বাড়িতে ২০২৩ সালের মধ্যে জল পৌঁছতে হবে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৫০ লক্ষ বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে। ২০২০ জুলাইতে জল জীবন মিশন প্রকল্প শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩৩৭৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যের খরচ অর্ধেক। এর বাইরে জমি, ওভারহেড ট্যাঙ্ক, সারফেস ট্যাঙ্ক সব তো রাজ্যের খরচে হয়েছে। টেন্ডার নিয়ে যে বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা, তার পাল্টা রাজ্যের তরফে দাবি করে বলা হয়েছে, ১ লাখ পর্যন্ত খরচের কাজ অফলাইনে। বাকি সব তো অনলাইনেই টেন্ডার হয়। যে কেউ পেতে পারে।