সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Saugata Roy)। বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে আরও একবার বিতর্কে জড়ালেন তিনি। এবার বিরোধীদের ‘পিঠে তাল পড়া’র হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। তাঁর মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
শুক্রবার দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে জলপ্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সৌগত রায়। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিরোধীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বলুন আপত্তি নেই। ভুল করে একথা বলবেন না তৃণমূলের সকলে চোর। তাহলে কিন্তু পিঠে তাল পড়লে দুঃখ করবেন না। মমতা দুর্নীতির রানি এসব বললে আমাদের ছেলেরা রেগে যায়। রেগে গেলে মাথার ঠিক থাকে না। কী করবে বলতে পারছি না। সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস সকলকে বলে যাচ্ছি এই দু’টি কথা ভুলেও বলবেন না।”
[আরও পড়ুন: TET দুর্নীতি মামলা: তদন্ত করবে সিবিআই-ই, রাজ্যের আবেদন খারিজ করে রায় হাই কোর্টের]
রাজ্যের একসময়ের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল আপাতত জেল হেফাজতে। পার্থকে ইডি গ্রেপ্তার করে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে। গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের জালে অনুব্রত। এই দুই গ্রেপ্তারির পর বিরোধীদের বেলাগাম ভাষায় আক্রমণ করেই চলেছেন সৌগত। অন্যান্য বারের মতো এবারও সৌগত রায়ের এমন মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। বিরোধীরা তাঁর মন্তব্যের সমালোচনায় সরব। তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদকে ফের একহাত নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তাঁর পালটা আক্রমণ, “আপনাদের নেতারা যখন টাকা নিচ্ছেন তখন আপনাদের ছেলেরা রেগে যায় না। এই রাগ বেশিদিন থাকবে না। সাধারণ মানুষ নামিয়ে দেবে। এসব এ বয়সে শোভা পায় না। তাই যা তা কথা বলবেন না।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও সমালোচনার সুর। তিনি বলেন, “উনি (সৌগত রায়) যেটা বলেছেন একদিকে ঠিক। সত্যিই সকলে তো চোর নয়। এমন অনেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক রয়েছেন যাঁরা টাকা নেননি। তাঁরা এখন লজ্জিত হচ্ছেন। তবে কিছু রাঘব বোয়াল যে টাকা চুরি করেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।”
এদিকে, তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন দলেরই বর্ষীয়ান সাংসদের কথা প্রসঙ্গে একটি বাক্যও খরচ করেননি। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “সিবিআই, ইডি আছে বলে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। জগাই, গদাই, মাধাই যতই একসঙ্গে কুৎসা করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাধারণ মানুষের মন থেকে সরাতে পারবেন না।”