সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সহজে বিদায় নেবে না। এই মারণ ভাইরাস নিয়েই বাঁচতে হবে সকলকে। যতদিন যাচ্ছে, এই সত্যিটাই মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন সাধারণ মানুষ তথা নেতা-মন্ত্রীরাও। আর তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, সঠিক পরিকল্পনা করেই লকডাউন মানতে হবে এবং করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করেই সব স্বাভাবিক করার পক্ষে তিনি। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন লকডাউনের মধ্যেও কোন কোন বিষয়গুলিতে ছাড় দেওয়া হবে।
দেশজুড়ে তৃতীয় দফায় ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হলেও মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২১ মে পর্যন্ত বাংলায় লকডাউনের পরিস্থিতিই বহাল থাকবে। এখনও নিজের অবস্থানে অনড় তিনি। তবে অর্থনীতিকে টেনে তোলার জন্য ধাপে ধাপে ছাড় দিতে হবে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে ভিনরাজ্যে আটকে পড়াদের বাড়ি ফেরানোর জন্যও বিশেষ চিন্তাভাবনা রয়েছে রাজ্যের। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ন’টি ট্রেন এসেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে। একটি ট্রেন আজই এসেছে। অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়াদের বাড়ি ফেরাতে আরও ১০০টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: এবার করোনার বলি ক্যালকাটা টেলিফোনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, বাড়ছে উদ্বেগ]
এদিকে লকডাউনের মাঝেও অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য রেড জোনকে তিন ভাগে ভাগ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। A জোনে থাকবে সম্পূর্ণ লকডাউন। B জোনে সোনার, ইলেকট্রনিক্সের দোকান ও রেস্তরাঁ ছাড়া অন্যান্য খাবারের দোকান খোলায় ছাড় দেওয়া হবে। C জোনে ছাড়ের মাত্রা আরও বাড়বে। কোন ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে, তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ঠিক করবে পুলিশ। দুই দফায় ছাড় দেওয়া হবে রাজ্যে। প্রথম দফা শুরু আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে। আর দ্বিতীয় দফা ২১ মে থেকে চালু হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আর কোন ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
১. সামাজিক দূরত্ব মেনে টলিপাড়ায় কাজ শুরুর পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী। শুটিং ছাড়া ডাবিং, এডিটিং, মিক্সিংয়ের কাজ চালু করা যাবে।
২. বিড়়ি শিল্পে ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ করাতে ছাড় দেওয়া হল। চা শিল্পেও দেওয়া হল ছাড়।
৩. জেলায় গ্রিন জোনে চলবে বাস, ট্যাক্সি। তবে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং মেনে চলতে হবে প্রত্যেককে। ২১ মে থেকে কনটেনমেন্ট জোনেও বাস চলাচল সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
৪. ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগোনোর কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৫. তাঁতের হাট, খাদি, বিশ্ববাংলা হাট খোলার অনুমতি দেওয়া হল।
৬. গ্রামে যে সমস্ত নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে, সেগুলি চালু করা যাবে।
৭. প্রয়োজনে ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
৮. ক্লাবগুলিকে তিনি নির্দেশ দেন, রাস্তায় বেরলে সবার মুখে মাস্ক রয়েছে কি না, তা দেখতে।
[আরও পড়ুন: হুগলির ঘটনা নিয়ে ভুল টুইটের জের, বিজেপি নেতা অমিত মালব্যকে কটাক্ষ মদনের]
এরই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান যতদিন পারবেন শিক্ষকদের বেতন দিয়ে যাবে রাজ্য। জয় বাংলা স্কিমের আওতায় জুন ও জুলাই মাসের পেনশনও দিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়়া ১১ লক্ষ কিষাণ ক্রেডিট কার্ডও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এককথায়, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেও বাংলাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর পরিকল্পনাই করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
The post বাংলাকে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক করতে ৩ ভাগে বিভক্ত রেড জোন, কোন কোন ক্ষেত্রে মিলবে ছাড়? appeared first on Sangbad Pratidin.
