নব্যেন্দু হাজরা: নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। কোন দপ্তরে কত গ্রুপ 'সি' কর্মী রয়েছেন, তার তালিকা চেয়ে সরকারকে চিঠি দিল নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব এই কর্মীর সংখ্যা জানাতে হবে কমিশনকে। গ্রুপ 'সি' এই কর্মীরা বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-এর দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবেন। নতুন ভোটারের নাম সংযুক্তিকরণ, নাম সংশোধন, ঠিকানা বদল-সহ নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম করবেন। নবান্ন সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র গ্রুপ 'সি' কর্মীদের তালিকাই চাওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার কথায়, বিএলও-র সুপারিশের ভিত্তিতেই জেলার ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) আবেদনকারীর নাম ভোটার তালিকায় তোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। ফলে কোনও গরমিল পেলেই কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে। কমিশন জানিয়েছে, স্থায়ী সরকারি কর্মী, পঞ্চায়েত, পুরসভা বা কোনও স্বশাসিত সংস্থার স্থায়ী কর্মীকেই বিএলও করতে হবে। কোনওভাবেই চতুর্থ শ্রেণির পদমর্যাদার কর্মীকে এই দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
কমিশন সূত্রে খবর, চলতি মাসেই রাজ্যের ৮০ হাজার ৪৫৩ বিএলও নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তার পরে শুরু হবে বিশেষ প্রশিক্ষণ। প্রথম দিকে কয়েক দফায় বিএলও-দের দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২ জুলাই থেকে দু'দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে কমিশন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ বিএলও দিল্লিতে বসে প্রশিক্ষণ নেবেন। বাকিরা নিজেদের জেলায় বসে অনলাইন প্রশিক্ষণে যোগ দেবেন। এঁদের সঙ্গে থাকবেন ইআরও, জেলাশাসক বা জেলার নির্বাচনী আধিকারিকরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও এদেশের ভোটার কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এই তথ্যই কমিশনকে ভাবাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিএলওদের ভূমিকা স্ক্যানারে এসেছে। কারণ বুথভিত্তিক সমীক্ষা করে ভোটার কার্ড পেতে কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য সেই তথ্য দেয় বিএলও-রাই। আর তা নজরে আসে কমিশনের। তাই তাদের নিয়োগবিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বলা হয়, বিএলও নিয়োগ করতে হবে গ্রুপ সি এবং তার উপরের স্তরের কর্মীদের থেকে। সংশ্লিষ্ট কর্মীকে হতে হবে পূর্ণ সময়ের চাকুরিজীবী। তবে পঞ্চায়েত ও পুরসভার স্থায়ী কর্মীরাও সেক্ষেত্রে এই তালিকাভুক্ত হতে পারেন। যদি কোনও কারণে এতসংখ্যক কর্মী না পাওয়া যায় তখন ইআরও এবং জেলাশাসক তা জানাবেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে। তিনি অনুমতি দিলে তবেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের এই বিএলও-র কাজে নেওয়া হতে পারে।