দীপঙ্কর মণ্ডল: সাম্প্রতিককালে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের তিক্ততা যেন ক্রমশই বাড়ছে। সেই ধারা বজায় রইল রবিবারেও। এবার পটাশপুরের বিজেপি কর্মী মদন কুমার ঘোড়ইয়ের (Madan Kumar Ghorui) মৃত্যু নিয়ে সরব রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁকে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এদিন এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠিও লেখেন। এছাড়াও টুইটে তিনি লেখেন, জেল হেফাজতে থাকাকালীন মদন কুমার ঘোড়ইয়ের মৃত্যু আরেকটি ভয়ংকর ঘটনা। ওই বিজেপি (BJP) কর্মীকে অমানবিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
এছাড়া রাজ্য পুলিশের ডিজি, রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশকে ট্যাগ করে আরও একবার তাদের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)।
[আরও পড়ুন: প্রতিবেশীকে বাঁচানোর চেষ্টাই কাল! বাড়িওয়ালার এলোপাথাড়ি কোপে প্রাণ গেল ট্যাংরার যুবকের]
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা যুবক কিশোর ঘোড়ই কয়েকমাস আগে বাসুদেরপুর এলাকার গৌরাঙ্গ পাখুরিয়ার এক যুবতীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। আগে থেকে তাঁদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই দাবি স্থানীয়দের। যুবতীর বাড়ি থেকে পটাশপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ছেলেটির মা এই ঘটনার পর আত্মগোপন করেন। দীর্ঘ খোঁজাখুজি করেও মেলেনি মা, ছেলের খোঁজ। গত ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ ওই যুবকের কাকা মদন কুমার ঘোড়ইকে পটাশপুর থানার পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আদালত তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। জেল হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতায় পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ খবর দেয় মদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলেই। পুলিশি অত্যাচার মদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ অনেকের। শুক্রবার বিজেপি কর্মীর দেহ কলকাতায় আনা হয়। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের (Locket Chatterjee) নেতৃত্বে নিহত বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে মিছিল হয়। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে মিছিল আটকায় পুলিশ। প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ করেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও হাই কোর্টের তরফে বলে দেওয়া হয়, এসএসকেএম হাসপাতালে নয়। ময়নাতদন্ত হবে আরজি কর হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ভিডিওগ্রাফি আগামী ২১ অক্টোবরের জমা দিতে হবে হাই কোর্টে। তবে দেহ আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার পর সেই নির্দেশে বদল ঘটে।