অভিষেক চৌধুরী, কালনা: গায়ের রং চাপা। তাই শ্বশুরবাড়িতে প্রতিনিয়ত জুটত খোঁটা। অভিযোগ, চলত অত্যাচারও। মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ওই বধূ। এদিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরকে।
পূর্বস্থলীর বড়ধামাস এলাকার বাসিন্দা ওই বধূর নাম সরোজিনী ঘোষ (২৩)। বাড়িতেই ঝুলন্ত অবস্থায় ওই বধূর মৃতদেহ উদ্ধার হয় সোমবার। অভিযোগ, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। এরপরই বধূর বাপের বাড়ির লোকজন পূর্বস্থলী থানার দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মৃতার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পূর্বস্থলী থানার পুলিশ আধিকারিক। ধৃতদের নাম দেবার্ঘ ঘোষ ও বাবলু ঘোষ। মঙ্গলবার তাঁদের কালনা মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়।
[আরও পড়ুন: তীব্র গরমে এগিয়ে আসতে পারে স্কুলের গরমের ছুটি? উত্তর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী]
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলি জেলার ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা সরোজিনীর সঙ্গে প্রেম করে চারবছর আগে বিয়ে হয় পূর্বস্থলী থানার বড়ধামাস গ্রামের বাসিন্দা দেবার্ঘ ঘোষের। তাঁদের একটি আড়াই বছরের কন্যা সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ,সরোজিনীর গায়ের রং কালো বলে বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করত। শুধু তাই নয়, তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।
গত কুড়ি দিন ধরে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মেয়েকে নিয়ে ভদ্রেশ্বর এলাকায় চলে যান তাঁর বাবা স্বপন মণ্ডল। যদিও দশ-বারো দিন আগে সরোজিনীকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে যান শ্বশুর বাবলু। তার পরই এই ঘটনা। মৃতার পিসেমশায় সুকুমার দাসের কথায়, “ফেসবুকেই আলাপ। এরপরেই প্রেম ভালোবাসা করে বিয়ে হয়। কিন্তু মেয়ের গায়ের রং কালো বলে প্রতিনিয়তই শ্বশুরবাড়ির লোকজন খোঁটা দিত। মারধর করত।” বাবা স্বপন মণ্ডল বলেন,“দিনের পর দিন মেয়ের উপর অত্যাচার বেড়ে যাওয়ার কারণে সোমবার আমার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাই দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।”