সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পবিত্র পাহাড়, একটাই শিলা দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি। তাতে পা রাখা মানে চূড়ান্ত পাপ। এমনই প্রচলিত বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী অনঙ্গু সম্প্রদায়ের মানুষজনের। তাই তাঁদের বিশ্বাসকে প্রাধান্য দিয়ে এবার অস্ট্রেলিয়ার উলুরু পাহাড়ে ওঠায় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে প্রশাসন। তার আগে আজ, শুক্রবার, শেষবারের মতো উলুরু পাহাড়ে চড়লেন আরোহীরা। একে একে বহু পর্বতারোহী দিনভর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পৌঁছে গেলেন চূড়ায়।
অস্ট্রেলিয়ার উলুরু-কাটা জুটা ন্যাশনাল পার্ক। এখানেই তৈরি হয়েছে বালিপাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে একটি পাহাড়। যা প্রাকৃতিকভাবে একপ্রস্তরস্তম্ভ। অস্ট্রেলিয়ার এই এলাকায় প্রবল গরম। এত উত্তাপের কারণে লালচে রঙের ছাপ পাহাড়জুড়ে। এবং চূড়ার উষ্ণতা প্রায় ৫০ ডিগ্রির আশেপাশে, প্রকৃতি মারাত্মক রুক্ষ। সেইসঙ্গে ১১৪২ ফুট এবড়োখেবড়ো খাড়াই পথ। যে কোনও মানুষের পক্ষে যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এক জাপানি পর্বতারোহী এখানে উঠতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যান। পাহাড়ের নিচেই বসবাস এখানকার ভূমিপুত্র আদিবাসী অনঙ্গু সম্প্রদায়ের। তাঁরা এখনও আধুনিক সভ্যতা থেকে বেশ খানিকটা দূরে। পোশাকের বিশেষ বালাই নেই। গাছের বাকল, মাথায় পালক নিয়ে শিকার করে জীবনধারণ করে। তাঁদের কাছে এই পাহাড় পবিত্র।
[ আরও পড়ুন: রহস্য ফাঁস লন্ডন ট্রাক বিভীষিকার, প্রকাশ্যে হাড়হিম করা তথ্য]
তাই নিজেদের পবিত্র স্থানে কাউকে পা রাখার অনুমতি দিতে চান না এঁরা। মনে করতেন, প্রকৃতি রুষ্ট হয়ে অভিশাপ দেবে। বাদ সাধত প্রকৃতিও। সবমিলিয়ে, অস্ট্রেলিয়ার আকর্ষণীয় একপ্রস্তরস্তম্ভে পৌঁছনো কঠিন হতো অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী আরোহীদের পক্ষে। তবে শুক্রবার বহু মানুষ এগিয়ে গেলেন পাহাড়ের চূড়ার দিকে। লালচে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে, প্রখর রোদকে সঙ্গী করেই পৌঁছে গেলেন চূড়ায়। শেষ আরোহী সেখানে পা রাখা পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন সবাই। বিকেলের দিকে দেখা গেল, তিনিও পৌঁছে গিয়েছেন। এই ঘটনা দেখে কিছুটা হতবাক অনঙ্গু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনও। কেউ আবার খানিকটা অসন্তুষ্ট। একজনের কথায়, ‘এই পাহাড় আমাদের কাছে ভারী পবিত্র স্থান। আপনাদের কাছে গির্জা যেমন, তেমন।’
আর যাঁরা চূড়ায় পৌঁছলেন, তাঁরা তো আনন্দে আটখানা। এঁদেরই একজন, রামেথ থমাস বলছেন, ‘এটা একটা দীর্ঘ পাথর। আমার মনে হয়, এখানে উঠতে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রাখা উচিত নয়।’ অনেকেই ছবি ছড়িয়ে দিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। লিখলেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা। আর যে এখানে আসার সুযোগ পাওয়া যাবে না। প্রশাসনের তরফে এমন নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় মুখে হাসি ফুটেছে আদিবাসীদের।
[ আরও পড়ুন: সমালোচনা বন্ধের চেষ্টা সরকারের পক্ষে ক্ষতিকারক, বলছেন রঘুরাম রাজন]
The post আদিবাসীদের পবিত্র স্থানে পা রাখতে নিষেধাজ্ঞা, শেষবারের মতো পাহাড়ে পর্যটক দল appeared first on Sangbad Pratidin.