সুকুমার সরকার. ঢাকা: বছর দুয়েক আগে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। মাস চারেক আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হাতকড়া পরতে হয় ঢাকার সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে। এই দুই ঘটনা বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এই প্রেক্ষাপটে বড় ঘোষণা করলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী হক জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে যে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন আনা হচ্ছে সেখানে মানহানির মামলায় সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের বিধান থাকবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বেশকিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই আইনের বহু ধারা নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন করার সিদ্ধান্তে নীতিগত অনুমোদন হয়েছে বলে খবর। আইনটির বদলে সরকার নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ আনছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে সাবধানী ফেসবুক, গুজব ঠেকাতে বিশেষ প্রস্তুতি মেটার]
এদিন আইনমন্ত্রী জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির অভিযোগে জেলের সাজা দেওয়ার বিধান ছিল। নতুন আইনে তা পরিবর্তন করে কারাদণ্ডের বদলে জরিমানার বিধান করা হবে। আর পাঁচটা দেওয়ানি মামলায় যেভাবে জরিমানার বিষয় রয়েছে, সেভাবেই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও একই বিষয়গুলি থাকবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী। বলে রাখা ভাল, বহুদিন ধরেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল অথবা সংশোধনের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। পাশাপাশি রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে আইনটির প্রয়োগ স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টে মামলা দায়ের হয় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে। তারপরই তাঁকে আটক করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি আওয়ামি লিগ, বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা রোজিনার মুক্তির দাবি জানান। জয়া আহসানের মতো বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের তারকা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহলেও তাঁকে মুক্তির দাবি ওঠে। গত মার্চ মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (DSA) মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকার সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। সবমিলিয়ে, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।