স্টাফ রিপোর্টার: বাংলায় হাঁটু রিপ্লেসমেন্টের তুলনায় হিপ রিপ্লেসমেন্টের সংখ্যা অনেক কম! অর্থাৎ বঙ্গবাসীর হাঁটুর চেয়ে হিপের সমস্যা অনেক কম। আর এর নেপথ্যে বাঙালির বিশেষ অভ্যেস। কী সেই অভ্য়েস? চিকিৎসকরা মনে করছেন, এর কারণ বাঙালির মাটিতে বসে কাজ করার অভ্যাস।
ডা. অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। দেখা গিয়েছে, 'স্কোয়াট পজিশন' বা হাঁটু মুড়ে বসলে হিপের গতিশীলতা বা মোবিলিটি বৃদ্ধি পায়। বাংলার মানুষের সে অভ্যাস সর্বজনবিদিত।" নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অস্থি-শল্য বিভাগের অধ্যাপক ডা. কিরণ কুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলার গ্রামে-মফস্বলে অনেক বাড়িতে এখনও পুরনো দিনের ইন্ডিয়ান টয়লেট রয়েছে। মাটিতে বসে ঘরের কাজ করেন অনেকেই। তায় যে ভঙ্গিতে বসেন এটাকে 'স্কোয়াট' পজিশন বলে। স্কোয়াট পজিশনে বসলে হিপ জয়েন্টের কার্যকারিতা বাড়ে। দেখা গিয়েছে, যাঁরা ওয়েস্টার্ন লাইফ স্টাইলে যত বেশি অভ্যস্ত তাঁদের মধ্যে হিপ জয়েন্টের ক্ষয় তত বেশি। চিকিৎসকরা মনে করছেন, এই কারণেই বাংলায় হিপ রিপ্লেসমেন্টের ঘটনা কম। তবে হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে বাংলায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে গড়ে পাঁচটা হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে প্রতি মাসে।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল রলেজের অস্থিশল্যবিদ ডা. অমিয় বেগরা জানিয়েছেন, বিনামূল্যে জটিল থেকে জটিলতর হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে বাংলার সরকারি হাসপাতালে। সমস্ত ধরণের ইমপ্ল্যান্ট মিলছে সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। হট্টির সমস্যার একিেবজ কারণের মধ্যে অন্যতম অস্টিও আর্থাইটিস। হাঁটুর জয়েন্ট ক্ষয়ে যাওয়া এর প্রধন কারণ। ডা. কিরণকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রতিবছর সঠিক পরিমাণে ক্যালশিয়াম না খেলে বছরে দুই শতাংশ করে হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে। হাঁটু ঠিক রাখতে সঠিক ডায়েটের পাশাপাশি, ক্যালশিয়াম-ভিটামিন ডি নিতে হবে।
দেশের নিপুণ অস্থি শল্যবিদের মধ্যে সিংহভাগই বাংলার। সে কারণে ভারতের অন্যান্য শহরে নয়, 'ওয়ার্ল্ড অর্থোপেডিক কনসার্ন'-এর ইন্ডিয়া চ্যাপ্টারের উদ্বোধন হল শহর কলকাতায়। রবিবার এই উপলক্ষে শহরের এক হোটেলে হাজির হয়েছিলেন দেশের তাবড় অস্থি-শল্যবিদরা। ডা. অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, ডং কিরণ কুমায় মুখোপাযায়, ডা. চিশ্বরনাথ, ডা ইন্দ্রজিৎ সর্দার, ডা. অমিয় বেরা, ডা. সিদ্ধান্তে গোয়েলরা বললেন, এই মুহূর্তে বাংলায় যত হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে তার মধ্যে ১৯ শতাংশ চূড়ান্ত সফল। হাঁটু প্রতিস্থাপন আকছার হলেও বাংলায় ছিপ রিপ্লেসমেন্ট তুলনামূলকভাবে কম। এদিনের অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে ইংল্যান্ড থেকে হাজির ছিলেন প্রখ্যাত অস্থি-শল্যবিদ ডা বিকাশ খান্দুজা। ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের কোর্স ডিরেক্টর ডা. বিকাশ খান্দুজা। এদিন শহরের অস্থি-শল্যবিদদের দশটি টিপস দেন।