নন্দন দত্ত,সিউড়িঃ শনিবার ধন ত্রয়োদশী বা ধনতেরাস। অবাঙালী রীতি মেনে সেই উপলক্ষ্যে আম বাঙালির এখন ঝাঁটা কেনার হিড়িক। তাই ধনতেরস উপলক্ষ্যে ঝাঁটা সরবরাহ করতে হিমসিম অবস্থা ব্যবসায়ীদের।
দীপাবলীর দু’দিন আগেই বাংলা জুড়ে ধনতেরস (Dhanteras) একটা উৎসবে পরিনত হয়েছে। পাঁচ দিনের দীপাবলী উৎসবের তৃতীয় দিনে এই ধনাত্রয়োদশী বা ধনবত্রী ত্রয়োদশী। এদিন একটা দামি ধাতু কেনার প্রচলন অবাঙালীদের মতন বাংলায় গত কয়েকবছরে বেশ প্রচলন হয়েছে। সম্পদের দেবতা কুবেরকে এদিন পুজো করা হয়। কথিত আছে রাজা হিমার ১৬ বছরের ছেলের বিয়ের চারদিনের মাথায় সাপের কামড়ে মৃত্যু হবে। এই দৈববানীতে তার স্ত্রী অভিশপ্ত রাত্রে স্বামীকে জাগিয়ে রেখে শোয়ার ঘর পরিস্কার রেখে চারিদিকে সমস্ত সোনার গহনা ও সোনা রুপার মুদ্রা ফেলে রাখে। সঙ্গে জ্বালিয়ে দেয় বাতি। মৃত্যুর দেবতা এসে রাজপুত্রের শোবার ঘর পর্যন্ত যান ঠিকই কিন্তু সোনার গহনার জৌলুসে কাজ অসম্পুর্ণ রেখে চলে আসে। সেই থেকে ঘর পরিষ্কার ও দামি ধাতু কেনার প্রচলন।
[আরও পড়ুন: খাবারে পোড়া গন্ধ? অযথা চিন্তা না করে দূর করুন এই সহজ ৭ উপায়ে]
সাঁইথিয়ার ব্যবসায়ী রঞ্জিত চৌধুরী বলেন কালীপুজোর দু দিন আগে সকালে উঠে নতুন ঝাঁটা দিয়ে ঘরের চারিপাশ পরিষ্কার করে কুলো দিয়ে তা ফেলতে হয়। যাতে কোনও ময়লা না থাকে। তাই এদিন সব অবাঙালি পরিবার কমপক্ষে একটা ঝাঁটা কিনবেই। সিউড়ির বাসিন্দা শ্যামনন্দন বার্নোয়াল জানান, কালীপুজোর পরেরদিন লক্ষী পুজো হয় আমাদের। তাই ভূত চতুর্দশীর আগে ঝাঁটা দিয়ে অলক্ষ্মীকে বিদায় ঝেঁটিয়ে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মীকে স্বাগত জানানো হয়। জেলা জুড়ে তাই ঝাঁটা সরবরাহ করতে ঘুম ছুটেছে বোলপুরের কালিকাপুর গ্রামে। ওই গ্রামের গোটা পাড়া সারা বছর ঝাঁটা তৈরি করে। গ্রামবাসীরা জানান, নারকেলের পাতার কাঠি রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে আরামবাগ, কাটোয়ার দাঁইহাট ,বজবজ এমনকি উত্তর প্রদেশ থেকে ট্রাক বন্দি করে কাঠি নিয়ে আসা হয়। ঝাঁটা প্রস্তুত কারক বাসুদেব পাত্র জানান,গত কয়েক বছর আগেও এমন ঝাঁটার চাহিদা ছিল না। কিন্তু এখন কালীপুজোর আগে ধনতেরাস উপলক্ষ্যে ঝাঁটার সরবরাহ দিতে হিমসিম খেয়ে যাচ্ছি। সাঁইথিয়ার ঝাঁটা সরবরাহের পাইকারি বিক্রেতা সুজিত ঘোষ বলেন, ধনতেরস আসতেই এখন প্রতিদিন একশো বান্ডিলের বেশি ঝাঁটা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি বান্ডিলে ১৫ টি করে ঝাঁটা থাকে। পাইকারি হিসাবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করে বিক্রি হয়।