shono
Advertisement

কিডনি স্টোনের জন্য উপকারী বিয়ার? জবাব দিলেন বিশেষজ্ঞ

সত্যিটা কী? জানুন।
Posted: 02:28 PM Nov 11, 2023Updated: 03:47 PM Nov 11, 2023

কিডনিতে স্টোন কেন হয়? এই নিয়ে নানা মত রয়েছে। অনেকের ধারণা মদ্যপানে ঝুঁকি বাড়ে, আবার কেউ মনে করেন এই নেশায় পাথর বেরিয়েও যায়। সত্যিটা কী? বিশ্লেষণে পিয়ারলেস হাসপাতালের ইউরোলজিস্ট ডা. অভিষেক দত্ত। তাঁর কথা শুনলেন মৌমিতা চক্রবর্তী।

Advertisement

উৎসবের মরশুম। তাই খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানা বেশ মুশকিল। অনিয়ম-বেনিয়ম চলে। দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023) গেল তো কি! এখন পর পর নানা পুজো, নানান উৎসব। আর উৎসব মানেই বাড়িতে ভোজন সঙ্গে মদ্য সেবন। আনন্দ-উল্লাসের আড়ালে অনেক কিছুই শারীরিক সমস্যা মাথাচাড়া দিতে পারে। তার মধ্যে রয়েছে কিডনিতে স্টোন (Kidney Stones)।

সরাসরি বললে, মদ্যপান নানা সমস্যার মধ্যে কিডনিরও ক্ষতি করে। তবে শুধু মদ্যপান নয়, কিডনিতে পাথর হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। আবার অনেকের ধারণা রয়েছে মদ, বিশেষত বিয়ার খেলে পাথর বেরিয়ে যায়। এই ধারণা ঠিক নয়। তাই কিডনিতে স্টোন হওয়া রুখতে মদের সঙ্গে আরও অনেক ব্যাপারেই সতর্ক হতে হবে।


স্টোনের কারণ?
শরীরের খনিজ লবণ মূত্রথলি বা কিডনিতে জমা হতে হতে সেটি ধীরে ধীরে শক্ত পদার্থে পরিণত হয়, যাকে স্টোন বা পাথর বলা হয়। মূত্রথলিতে যে পাথর জমা হয় সেগুলি বিভিন্ন পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ফসফেট, ইউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি দিয়ে তৈরি।
কম প্রস্রাব হলে প্রস্রাবে খনিজ পদার্থের ঘনত্ব বাড়তে থাকে এবং পাথর জমার সম্ভাবনা বাড়ে।

 

উল্লেখযোগ্য বিষয়, উৎসবের মরশুমে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান পরোক্ষভাবে কিডনিতে স্টোন তৈরির আধিক্য বাড়ায়। অ্যালকোহল প্রচুর পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি করলেও তা ডিহাইড্রেশন ঘটায় ও সেটি পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস ও স্থূলতা কিডনিতে পাথর গঠনের অন্যতম কারণ, যার প্রধান উৎস অ্যালকোহল সেবন।

অ্যালকোহল সেবনের ফলে অধিকাংশেরই কিডনিতে প্রদাহ এবং ফাইব্রোসিস হতে পারে। যার ফলে কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ে। ঘন ঘন মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই), গাউট অর্থাৎ অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড, হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম ও পাথর হওয়ার ইতিহাস থাকলে কিডনিতে স্টোন হতে পারে।

লক্ষণ কেমন
পিঠে ব্যথা, পিঠের দিক থেকে কুঁচকির দিকে ব্যথা হতে থাকে, প্রস্রাবে রক্ত বা হেমাটুরিয়া, ঘনঘন প্রস্রাব, জ্বর, একাধিক বার প্রস্রাবে সংক্রমণ বা ইউটিআই কিডনিতে পাথর হবার লক্ষণ।

[আরও পড়ুন: শব্দবাজি পোড়ানো ভালো নয়, শিশুদের কীভাবে বোঝাবেন? রইল উপায়]

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি
চিকিৎসার প্রথম পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য আল্ট্রাসাউন্ড এবং এক্স-রে ও সঙ্গে সিটি স্ক্যান প্রয়োজন অনুযায়ী করতে বলা‌ হয়। তারপর রোগীর অবস্থা ও পাথরের অবস্থান অনুযায়ী ওষুধ অথবা সার্জারির প্রয়োজন হয়। লেজার ইরেটোরোস্কপিক সার্জারি অর্থাৎ এন্ডোস্কোপিক যন্ত্রটি ইউরিনারি পথ দিয়ে মূত্রনালি বা কিডনি পর্যন্ত পৌঁছে লেজার দিয়ে পাথরকে ভেঙে গুঁড়ো করে দেওয়া হয়। অনেকের ক্ষেত্রে পার্কুটেনিয়াস সার্জারি অর্থাৎ স্কিন পাংচার করে পেন্সিল আকৃতির মতো এন্ডোস্কোপ কিডনি পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে সেটি দিয়ে লেজার বা লির্থরোট্রিপটার ব্যবহার করে কিডনি স্টোন ভেঙ্গে দেওয়া হয়।  উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলো ছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি করা হয়।

লাইফস্টাইল বদলানোই অন্যতম হাতিয়ার কিডনি স্টোন থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত জল পান করুন‌। সর্বদা প্রস্রাবের রঙের দিকে মনোযোগ দেওয়া আবশ্যিক। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হলে তা অপর্যাপ্ত জল খাওয়ার লক্ষণ। যা ডিহাইড্রেশনের সৃষ্টি করতে পারে। খাবারের অতিরিক্ত নুন ও প্রোটিন এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ইউরিক অ্যাসিড যাতে না বাড়ে সেদিকেও নজর দিতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড থেকে গাউট সৃষ্টি হয়। তা থেকে জয়েন্টগুলিতে ব্যথা সৃষ্টি করে।

এই সব সমস্যা কারও থাকলে সত্বর চিকিৎসা প্রয়োজন। অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার
যেমন স্ট্রবেরি, বাদাম, গমের ভুষি প্রভৃতি এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে লেবু, ডালিম, ক্র্যানবেরি জাতীয় ফল খাওয়া যেতে পারে।

[আরও পড়ুন: ডিপফেক ভিডিওর শিকার রশ্মিকা মন্দানা, কী এই প্রযুক্তি? ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement