অরূপ বসাক, মালবাজার: ডুয়ার্সের চা বাগান এলাকায় বিরলতম ঘটনা। ভালুকের (Bear)হামলায় মৃত্যু হল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের। আর তারপরেই ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভালুকটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ, ডুয়ার্সের (Dooars) মেটেলি ব্লকের মেটেলি চা বাগানের সামসিং চা বাগান সংলগ্ন ১৩ নম্বর সেকশনে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খুনিয়া বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের বনকর্মীরা। মেটেলি থানার পুলিশ ও অন্যান্য বন আধিকারিকরা। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, ভালুকটি নেওড়া ভ্যালি অভয়ারণ্য থেকে এসেছিল।
ডুয়ার্সের চা বাগান গুলিতে হাতি, চিতা, বাইসনের আগমন মাঝেমধ্যে হলেও ভালুকের আনাগোনা সেভাবে নেই। বনবিভাগের মতে, ভালুক সাধারণত এত নিচে আসে না। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় দেখা গেলও ডুয়ার্সের চা বাগান এলাকায় ভালুকের আগমন এক বিরলতম ঘটনা। মৃতের জেঠিমা যমুনা খালকো জানান, এসময় চা গাছে ফুল ফোটে। এই চা ফুলের ভাজা চা শ্রমিকদের অন্যতম প্রিয় খাবার।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Updates: ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যের কোভিড গ্রাফ, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৮০৩]
বুধবার দুটো নাগাদ দ্বিবেশ খালখো নামে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র চাবাগানের আবাদি এলাকায় চা গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করছিল। প্রায় জনমানবহীন দুপুর বেলায় চাবাগানের আবাদি এলাকায় চা ফুল সংগ্রহ করছিল। আচমকাই এক পুর্নবয়স্ক ভালুকের আগমন ঘটে দ্বিবেশের সামনে। ভালুকটি তাকে আক্রমণ করে ক্ষতবিক্ষত করে মারে। এই ঘটনার পর চাবাগানের অন্যান্য শ্রমিকরা ছেলেটাকে বাঁচতে ছুটে যায়। পাথর ছুরে ভালুকটিকে তাড়াতে চেষ্টা করে। এরপর ভালুকটি ছেলেকে ছেরে পালাতে শুরু করে। তাকে উদ্ধার করা হলেও বাচানো যায়নি। পরে ক্ষিপ্ত জনতা ভালুকটিকে আক্রমণ করে। ভালুকটিও মারা যায়।
[আরও পড়ুন: আগামী মাসেই রাজ্য বিজেপিতে বড়সড় রদবদল, নতুন কমিটিতে মহিলাদের প্রাধান্য]
এনিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, মেটেলি চা বাগানে ভালুকের আক্রমণে একজনের মৃত্যু ঘটেছে। ভালুকটিকেও মারা হয়েছে। দুটি দেহই উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অনারারিওয়াইল্ড লাইফ ওয়াড্রেন সীমা চৌধুরীর মন্তব্য, ”খবর পেয়েছি মেটেলি চা বাগানে ভালুকের আক্রমণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ভালুকটিকেও মারা হয়েছে। বনবিভাগকে সব ঘটনার তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।” বিশিষ্ট পরিবেশ প্রেমী নফসর আলি বলেন, ”ওই যুবকের মৃত্যু যেমন দুর্ভাগ্যজনক তেমন ভালুকের মৃত্যুও দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনা সত্যি বিরলতম।”