দীপঙ্কর মণ্ডল: প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পথ অবরোধকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কলেজ স্ট্রিট চত্বর। হিন্দু হস্টেল সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর মিটিয়ে নিক পড়ুয়ারা, দাবি পথচলতিদের। তবে এখনও পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় বিক্ষোভকারীরা। দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলেই হুঁশিয়ারি তাদের।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে একটানা সাড়ে আঠারো ঘণ্টা ধরে কলেজ স্ট্রিটে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। তার জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই ওই চত্বরে তীব্র যানজট। ভোরের দিকে গাড়ির গতিপথ বদল করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে কলকাতা পুলিশ। তবে তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা যে বাড়বে তা আঁচ করেছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সেই আশঙ্কাই যেন সত্যি হল। সাধারণ পথচলতি মানুষেরা সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে মেজাজ হারান। বেশ কয়েকজন মানুষ প্রতিবাদের সুর চড়ান। তাঁদের বক্তব্য, হিন্দু হস্টেল সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা একেবারেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সাধারণ মানুষের তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। তাই ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে মিটিয়ে নিক। কোনওভাবেই রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে দাবিপূরণের চেষ্টা করা উচিত নয়।
অবরোধ হঠাতে গেলে পথচলতিদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া হিন্দু হস্টেল ইস্যুতে কথা বলছেন, ততক্ষণ বিক্ষোভ-অবরোধ জারি থাকবে। বাকবিতণ্ডার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ জোর করে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে। এমনকী ছাত্রীদের গায়েও হাত দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তবে এই অশান্তি নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামাতে নারাজ উপাচার্য। একই অবস্থানে থেকে তাঁর দাবি, সংস্কারের টাকা পেলে হিন্দু হস্টেল সারানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। রাস্তা অবরোধ করলে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষেরই অসুবিধা হবে। এভাবে দাবিপূরণ হওয়া সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: তরুণীদের খোলা পিঠে আবির দিয়ে লেখা গালিগালাজ, বিতর্কে রবীন্দ্রভারতীর বসন্তোৎসব]
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন আগে এই হস্টেলের ৩, ৪ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ড খালি করার দাবি জানান পড়ুয়ারা। তবে তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবিপূরণের আশ্বাস দিলেও সমস্যা এখনও মেটেনি। এছাড়াও তাঁদের দাবিগুলি হল, হস্টেলের মেস স্টাফের সংখ্যা বাড়ানো এবং বিনা নোটিসে কোনও কারণ ছাড়া কেন মেস স্টাফ ছাঁটাই করা হল তার জবাব তলব। হিন্দু হস্টেল আন্দোলনে ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে কেন বাধা দেওয়া হল, সে উত্তরও চান আন্দোলনকারীরা। যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে পদ থেকে অপসারণেরও দাবি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। তার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের দাবি, হস্টেল আবাসিকদের নিয়ে ওয়েলফেয়ার কমিটি গঠন করতে হবে। একগুচ্ছ দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভে শামিল প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা।
The post অবরোধ তোলার দাবিতে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের সঙ্গে বচসা পথচলতিদের, উত্তপ্ত কলেজ স্ট্রিট appeared first on Sangbad Pratidin.