সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে চব্বিশের লোকসভা ভোট। মাঝের সময়টায় গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বঙ্গ রাজনীতি উথালপাথাল হয়েছে একাধিক রদবদলে। নেতাদের ভাগ্যও বদলেছে। শিক্ষা দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, গরু পাচারের মতো ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন শাসকদলের বড় নেতা, মন্ত্রীরা। এখন তাঁরা জেলবন্দি। তাঁদের ছাড়াই এবার লোকসভা ভোটে কাজ করতে হয়েছে দলের কর্মীদের। যদিও সকলেই প্রস্তুত ছিলেন কঠিন লড়াইয়ের জন্য। চিন্তা খানিক ছিলই। তবে ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, তৃণমূলের জেলবন্দি তিন নেতা - অনুব্রত মণ্ডল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীরাই জিতেছেন। শুধু এই জয়ের গোলাপে কাঁটা বিধে রইল অনুব্রত ও জ্যোতিপ্রিয়র গড় থেকে তৃণমূলের কম ভোটপ্রাপ্তি।
অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) ছাড়াই এবারের লোকসভা ভোটে বীরভূম ও বোলপুর আসন এসেছে ঘাসফুলের দখলে। সাংসদ হয়েছেন শতাব্দী রায়, অসিত মাল। কিন্তু ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, বোলপুরের (Bolpur) পুর এলাকা অর্থাৎ খোদ অনুব্রত-গড়েই যথেষ্ট পিছিয়ে তৃণমূল (TMC)। একটি ওয়ার্ডেও লিড পাননি শাসকদলের প্রার্থী অসিতম মাল। আবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত (Barasat) লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার জিতেছেন ঠিকই। কিন্তু যে দুটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি লিড পাননি, তার মধ্যে একটি হাবড়া (Habra)। এই আসনে কাকলির চেয়ে ঢের বেশি ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার। এই হাবড়ারই বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, যিনি রেশন দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি। ভোট ময়দানে নেতা না থাকায় কিছুটা ভুগতেই হল শাসক শিবিরকে।
[আরও পড়ুন: ভেঙে গেল ইন্ডিয়া জোট? দিল্লি বিধানসভায় ‘একলা চলো’ নীতি আপের]
উলটো ছবি অবশ্য কলকাতা দক্ষিণ (Kolkaকেন্দ্রে। এখানে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ তথা প্রার্থী মালা রায়। বেশিরভাগ বিধানসভা থেকেই লিড নিয়েছেন তিনি। বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরীর থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি ভোটে ব্যবধান বাড়য়েছেন মালা রায়। আর এই বেহালা পশ্চিম (Behala Paschim) পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র। শিক্ষা দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রায় তিন বছর ধরে জেলবন্দি। তবে তাঁর অনুপস্থিতিতেও তৃণমূলের ভালো পারফরম্যান্স অব্যাহত রইল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাজনীতির লড়াইয়ে কোনও ব্যক্তি নন, সাংগঠনিক শক্তিই আসল। আর তা প্রকৃত শক্তিশালী হলে নেতা ছাড়াই আসে সাফল্য।