সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আখাউড়ায় থামল বিএনপির আগরতলামুখী লংমার্চ। আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উসকানির প্রতিবাদে এই লংমার্চের ডাক দিয়েছিল খালেদা জিয়ার দল। আজ বুধবার সেই মতোই পথে নামে তারা। আর ফের ভারত বিরোধিতার ভাঙা রেকর্ড শোনা গেল বিএনপি নেতাদের মুখে। বস্তুত, রাজনৈতিকভাবে হালে পানি পেল না বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল।
এদিন আগরতলা অভিমুখী লংমার্চের যাত্রা পথে ভৈরবে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল পথসভা করে। ভৈরব মোড়ে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। সেখানে নতুন কিছু নয়, সেই একই বুলি শোনা যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভির গলায়। দেশীয় পণ্য কিনতে ও দেশীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার প্রতি বাংলাদেশিদের আহ্বান জানান তিনি। আদতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের প্রতি নির্ভরশীলতার বিরোধিতা করেন বিএনপি নেতা।
রিজভি বলেন, "শেখ হাসিনা কেন আজ বাংলাদেশের মসনদে নেই? শেখ হাসিনা এত প্রিয় কেন মোদি ও মমতাদের কাছে? এর কারণ, শেখ হাসিনা বিনা পারিশ্রমিকে ও বিনা টাকায় যা ভারতকে দিয়েছে, এটা তো জাতীয়তাবাদী চিন্তার কোনও মানুষ দেবে না। সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিনা টেন্ডারে ভারতকে দেওয়া হয়েছে। মমতা তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না। এই জন্য তো হাসিনা কোনও কথা বলেন না। কিন্তু বিএনপি বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে এর প্রতিবাদ করত, রাষ্ট্রসংঘ-সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরত। এছাড়া সীমান্ত হত্যা-সহ ভারতীয় আগ্রাসন নিয়েও হাসিনা কিছু বলেন না। এই কারণেই তিনি ভারতের কাছে এত প্রিয়।"
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে ভারত নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও দাবি করে রিজভি বলেন, "বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম-সহ সব ধর্মের মানুষের যে সম্প্রীতি তা কোনও অপপ্রচার করে ভাঙা যাবে না। অথচ অসম-সহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ধারাবাহিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আপনারা নাকি চট্টগ্রাম দখল-সহ নানা হুমকি দেন! আমরা কোনও দেশ দখল করতে চাই না। আমরা রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।'
অন্যদিকে, ছাত্রজনতা রক্ত দিয়ে ৫ আগস্ট দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে বলে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় বলেন, "এটা ভারতের দাসত্ব করার জন্য নয়। বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-সহ সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ আছি। কোনও ষড়যন্ত্রে এই সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট করা যাবে না।’বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, "শেখ হাসিনার পতন ভারত এখনও মেনে নিতে পারেনি, তাই ষড়যন্ত্র করছে। দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর চলবে না। আমরা স্বাধীনতা এনেছি মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্য, তাকে বিপন্ন করতে দেব না। স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজনে আবার হাতিয়ার তুলে নেব।" অর্থাৎ বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঢাকা সফরের পরেও ভারত বিরোধিতা থেকে সরছে না বাংলাদেশ।