সুপর্ণা মজুমদার: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন জনপ্রিয় তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। রবিবার ফ্যাশন শো’য়ে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করার পাশাপাশি নিজের সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক বৈরিতার মাঝেই সুমধুর স্মৃতি মনে করলেন কামারহাটির বিধায়ক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Buddhadeb Bhattacharjee) নিয়ে ছোট্ট কবিতাও বললেন তিনি। এরপর অবশ্য রবিবার রাতেই তিনি যান আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে, যেখানে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন ৭৯ বছরের কমরেড। সেখানেও সুস্থতা কামনা করার পাশাপাশি সৎ, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন বুদ্ধদেববাবুকে আজকের প্রজন্মের ‘মডেল’ বলে চিহ্নিত করলেন মদন মিত্র।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর গুরুতর অসুস্থতার খবরে রং, নীতি ভুলে পাশাপাশি এসেছেন সব রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারাক্ষণ তাঁর খোঁজ রাখছেন। সোমবার তিনি হাসপাতালে যেতে পারেন বলে খবর। এছাড়া তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরাও খোঁজ নিচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। রবিবার সেখানে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকি। রাতের দিকে পৌঁছন তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) মদন মিত্র।
তার আগে অবশ্য ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান ক্লাবে এক ফ্যাশন শো’য়ে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে মদন মিত্রকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তাতে ছোট্ট একটি কবিতায় তাঁর নিজের আবেগ প্রকাশ করেন তৃণমূল বিধায়ক। বলেন, ”বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে একটা কথাই বলা যায়, এ সমাজে হায়/ সব পাওয়া যায় ভাড়া/ শুধু সোজা, নির্ভীক/ শিরদাঁড়া ছাড়া। তাঁর সেই শিরদাঁড়া আছে। আর আজকের প্রজন্মের যাঁরা রাজনীতি করছেন, বুদ্ধবাবুকে দেখে তাঁদের বোঝা উচিত, সকলে শিরদাঁড়া বিক্রি করে রাজনীতি করে না। তিনি এই প্রজন্মের রোল মডেল।” তবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শাসনকালে তৃণমূল নেতাদের কীভাবে বিপদের মুখে পড়তে হয়েছিল, তারও উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে তা সত্ত্বেও শ্রদ্ধার জায়গা যে অটুট, তাও বুঝিয়ে দিলেন মদন মিত্র।
এরপর তিনি বামপন্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, ”এই জন্যই বামপন্থীরা শ্রদ্ধার। নিজেদের আদর্শ থেকে একচুলও সরেন না। জ্যোতি বসু জানতেন, দল বদলালে তিনি হয়ত প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। কিন্তু তবু আদর্শ কখনও বিসর্জন দেননি। বুকে লাল পতাকা নিয়েই চলে গিয়েছেন।” স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ‘অতি ভদ্রলোক’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এখন আর রাজনৈতিক বিরোধিতা তেমন প্রকট নয় কোনও শিবিরেই।