অর্ণব দাস, বারাসত: মা-বাবার প্রাণপাত করা অর্থ দিয়ে কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। মাধ্যমিকে ভালো ফলের স্বপ্ন দেখেছিল দেগঙ্গার (Deganga) ছাত্রী। কিন্তু অঙ্ক পরীক্ষা তার মনমতো হয়নি। সেই হতাশা আর চেপে রাখতে পারেনি। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে সুইসাইড নোটে ‘আমি চললাম’ লিখে আত্মঘাতী হল মাধ্যমিক (Madhyamik 2024) পরীক্ষার্থী নাসিমা খাতুন। শুক্রবার দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপা ১ পঞ্চায়েতের পূর্ব চ্যাংদানা গ্রামের গোবরাপাড়ার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত ছাত্রীর নাম নাসিমা খাতুন, বয়স ১৭ বছর। তার ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটেই স্পষ্ট হয়েছে কারণ। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বেড়াচাঁপা বীণাপানি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী নাসিমা খাতুনের মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন পড়েছিল দেগঙ্গার চৌরাশি হাইস্কুলে। বৃহস্পতিবার ছিল অঙ্ক পরীক্ষা। ফিরেই নাসিমা মা-বাবাকে জানিয়েছিল, পরীক্ষা (Exam) ভালো হয়নি। তবে পরের দিন জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষার প্রস্তুতিও শুরু করেছিল নাসিমা। সারা সন্ধে পড়াশোনা করে। রাতে পরিবারের সঙ্গেই খাওয়াদাওয়া সেরে ফের পড়বে বলে নিজের ঘরে চলে যায়। তার পরই জীবনে ইতি টেনে দেওয়ার মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নাসিমা খাতুন।
[আরও পড়ুন: শনিবার কি রাজ্যসভায় পেশ হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল? জল্পনা তুঙ্গে]
শুক্রবার সকালে উঠে বাড়ির সদস্যরা দেখেন, নাসিমার ঘরে আলো জ্বলছে। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন ভোরে উঠে হয়ত মেয়ে পড়াশোনা করছে। কিন্তু পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় হয়ে গেলেও সে ঘর থেকে না বেরনোয় নাসিমাকে ডাকাডাকি শুরু করেন সকলে। সাড়া মেলেনি। তখন দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায় তার ঝুলন্ত দেহ।
[আরও পড়ুন: ‘দেশদ্রোহীদের গুলি করে মারার আইন হোক’, মোদির কাছে আর্জি BJP নেতার]
নাসিমার খাট থেকে ছ পাতার একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ”আমি চললাম। আমি আর পারলাম না। কদিন পরে রেজাল্ট বের হবে। সেই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারব না। দিনরাত কষ্ট করে আমার পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন বাবা। কিন্তু তাঁর কষ্টের একফোঁটা ঘামের দাম দিতে পারলাম না। তাই চললাম।” মৃত ছাত্রীর আত্মীয় মফিজুল ইসলাম বলেন, ”বৃহস্পতিবার পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ফিরে নাসিমা বলেছিল, অঙ্ক পরীক্ষা ভালো হয়নি। কিন্তু তার জন্য কেউ তাকে বকাবকি করেনি। সবার সঙ্গে ভালোভাবেই কথা বলেছিল। নিজের ঘরে পড়তেও বসেছিল। কেন এমন করল বুঝতে পারছি না।” পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অঙ্ক পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্রী। তবুও সুইসাইড নোটের বয়ান এবং হাতের লেখা যাচাই করে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পুরুলিয়ার পাড়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ১৬ বছর অঙ্কিতা মাজি। তার বাড়ি পুরুলিয়ার পাড়া থানার আলকুশা গ্রামে। স্কুলের ফার্স্ট গার্ল মেধাবী এই ছাত্রীর শারীরিক সমস্যা ছিল দীর্ঘদিনের। পুলিশ জানিয়েছে, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে তার কষ্ট হতো। বাড়ির সিঁড়ি থেকে শুক্রবার তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।