সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে আসছেন মালদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী মুসা জামির! আগামী ১০ মের মধ্যে দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। আর তার আগে মুসা জামিরের এই সফরকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
দেশে চলছে লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই দুদফার ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৭ মে তৃতীয় দফার নির্বাচন। পিটিআই সূত্রে খবর, এই ভোট আবহে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে দিল্লিতে পা রাখতে পারেন মুসা জামির। জানা গিয়েছে, ভারতে এসে তিনি মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানো, সেদেশে বসবসকারী ভারতীয়দের অবস্থা, পর্যটকদের আগমন-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। পাশাপাশি দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জামির বৈঠকে বসবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে। গত এপ্রিল মাসেই ভারত ও জয়শংকরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন জামির।
[আরও পড়ুন: মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ‘ঢুকে পড়ল’ রুশ ফৌজ! চাঞ্চল্য আফ্রিকায়]
বলে রাখা ভালো, সম্পর্কে টানাপড়েনের মাঝেও মালদ্বীপে জরুরি পণ্যের জোগান বজায় রেখেছে ভারত। নয়াদিল্লির এহেন মানবিক পদক্ষেপে রীতিমতো আপ্লুত জামির। গত মাসে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট ও সময়পরীক্ষিত বলেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এক্স হ্যান্ডেলে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জামির লিখেছিলেন, ‘ভারত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের রপ্তানি জারি রেখেছে। এনিয়ে দুদেশের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে তা পুনর্নবীকরণ করেছে ভারত। এর জন্য বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ভারত সরকারকে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয় যে দুদেশের মধ্যে অটুট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।’
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু যে চিনের হাতে তামাক খান সেকথা সকলের জানা। বেজিংয়ের উস্কানিতেই ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে মালে। দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর নির্দেশ দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এইরকম একাধিক বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে মালদ্বীপের। কিন্তু এই টানাপড়েনের মাঝেও পড়শি দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: বেহাল পাহাড়ি রাস্তা, পাকিস্তানের খাদে বাস পড়ে মৃত অন্তত ২০]
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মালদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা রেকর্ড হারে কমে গিয়েছে। দিল্লির কাছে ঋণের পরিমাণও বিপুল। এর ফলে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গত মাসেই ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেন মুইজ্জু। পাশাপাশি আর্জি জানান, মালদ্বীপের ঋণ মকুব করে দিক নয়াদিল্লি। বলে রাখা ভালো, গত বছরের শেষ পর্যন্ত যা হিসেব ভারতের কাছে দ্বীপরাষ্ট্রের ঋণ প্রায় ৪০০.৯ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ফলে মুসার এই সফরে দুদেশের সম্পর্কের উন্নতি হয় কি না সেদিকেই নজর থাকবে কূটনৈতিক মহলের।