নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দীর্ঘদিন পর ফের মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল বীরভূমের খয়রাশোলে। তাতে স্থানীয় বিডিও এবং বিজেপি বিধায়ককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মঙ্গলবার সকালে পানসিউড়ি এলাকায় রাস্তার ধারে থামে পোস্টারগুলিকে সাঁটানো অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পোস্টারগুলি উদ্ধার করে। সাদা পাতার উপর লাল কালিতে লেখা বার্তা, শেষে সিপিআই (মাওবাদী) লেখা, যা মাওবাদীদেরই বিশেষ চিহ্ন। কী কারণে এই পোস্টার, তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার খয়রাশোলের উদ্ধার হওয়া মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টারগুলির একটিতে লেখা 'বিডিওর রক্ত চাই, বাংলাকে বাঁচাতে চাই।' আরেকটি পোস্টারে নিশানা করা হয়েছে খয়রাশোলের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহাকে। তাঁর ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে - মুন্ডু চাই। অর্থাৎ মাওবাদী হোক বা মাওবাদীদের নামে যে বা যারা পোস্টার দিয়েছে, তাঁদের নিশানায় এই দুই ব্যক্তি, তা স্পষ্ট।
মাওবাদীদের নিশানায় বিডিও, বিজেপি বিধায়ক। নিজস্ব ছবি।
কী কারণে এই পোস্টার, তা তো তদন্ত সাপেক্ষ। তবে প্রাথমিক অনুমান, সম্প্রতি এই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবর বনাম ব্লক পরিচালন কমিটির উজ্জ্বল কাবেরী, শ্যামল গায়েনদের মধ্যে। একপক্ষের অভিযোগ, তাঁদের না জানিয়ে উন্নয়ন খাতে টাকা খরচ করা হচ্ছে। এই অর্থ কাজে নয়, পকেটস্থ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন অসীমা ধীবর। তার তদন্ত চলছে। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে মাওবাদীদের নামে অন্য কেউ পোস্টারে এমন হুমকি দিল কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
এমনিতে খয়রাশোল মাওবাদী অধ্যুষিত হিসেবে প্রশাসনের মানচিত্রে চিহ্নিত ছিল। কিন্তু গত ৫,৬ বছর ধরে মাওবাদীদের কোনও সক্রিয়তা নেই। এলাকায় স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। তার মধ্যে আচমকা এসব পোস্টার ঘিরে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা জানিয়েছেন, ''প্রশাসন এর তদন্ত করুক। মাওবাদীদের নামে বিরোধীদের ভয় দেখানোর কৌশল নিচ্ছে শাসকদল। সাহস থাকলে সামনাসামনি বিরোধিতা করুক।'' বিডিও সৌমেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়ের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।