গৌতম ব্রহ্ম: আমলকী পানক, কালম। রসালা, আদ্রক পাকা, আপুপাম, আমলা স্কোয়াস, পামকিন সোয়া প্যানকেক। তালিকায় আরও আছে। রোগব্যাধি দূরে রাখতে এমন ২৬ রকমের স্বদেশি খাদ্যপ্রণালী প্রকাশ করল ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রক (Ministry of AYUSH)। এর কোনওটা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, ইমিউনিটি বুস্টার, কোনওটা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, কোনওটা রক্তবর্ধক। ভারতের প্রাচীন আয়ুর্বেদশাস্ত্র ঘেঁটে এই সব খাবারের তালিকা ও তাদের প্রস্তুত প্রণালী বের করা হয়েছে।
এই সব প্রচলিত পথ্য নিয়ে আয়ুষ্মান ভারত সেল শনিবার একটি বই প্রকাশ করেছে। যার লেখিকা তথা ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের সদ্য প্রাক্তন হওয়া নোডাল অফিসার ডা. সুলোচনা ভাট (Dr. Sulochana Bhatt) জানিয়েছেন, এগুলোর সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও সুস্থতার সরাসরি সম্পর্ক। এক-একটা খাবার একাধিক রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। গ্রন্থটি তাঁর তিন-চার মাসের নিরলস প্রচেষ্টার ফসল। এবং গ্রন্থকারের দাবি, ডায়েটিশিয়ানদের পরামর্শ নিয়ে খাবারের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। কোন রোগীর কী খাওয়া বারণ, তারও উল্লেখ রয়েছে বইয়ে।
[আরও পড়ুন: শরীরে রোগ প্রতিরোধক কোষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই কোভিডে মৃত্যু, বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা]
সুলোচনাদেবী শুক্রবারই নোডাল অফিসার হিসাবে অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, এই খাবারের তালিকা সম্বলিত পুস্তক সব রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যগুলি চাইলে তালিকা বাড়াতেও পারে। খাদ্যপ্রণালীর হেরফেরও করতে পারে। খাবারগুলিকে সরকারি ক্যান্টিন ও হাসপাতালের মেনুতে অন্তর্ভুক্ত করার কথাও ভাবছে আয়ুশ মন্ত্রক।
তবে উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য, সাধারণ মানুষকে ফাস্ট ফুড কালচার থেকে সরিয়ে এনে শুদ্ধ ভারতীয় খাবারে উৎসাহিত করা। সুলোচনাদেবীর দাবি, খাবারগুলি বানানো অত্যন্ত সহজ। খরচাসাপেক্ষও নয়। খেলে উপকার বই অপকার নেই। কী রকম?
যেমন আমলা স্কোয়াস-
আমলকী সেদ্ধ করে তা থেকে প্রথমে মণ্ড প্রস্তুত করা হয়। তাতে মিছরি, সৈন্ধব লবন, বিট নুন, জিরে ও গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে স্কোয়াস বানাতে হবে। খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই উপকারী। চিকিৎসকদের মতে, আমলকীতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা ইমিউনিটি বুস্টার হিসাবে ইতিমধ্যে প্রমাণিত। উপরন্তু অম্লদোষ কাটায়, অ্যানিমিয়া সারাতে সহায়ক।
বিটের হালুয়া –
বিটের সঙ্গে দুধ, ঘি, চিনি, আমন্ড, এলাচ মিশিয়ে বিটের হালুয়া তৈরি করা হয়। এটি শরীরে রক্ত সংবহন বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যানিমিয়া সারায়।
কুমড়োর বড়া –
কুমড়োর সঙ্গে সয়াবিন, রাগির পাউডার, নারকেল, ঘি মিশিয়ে তৈরি কুমড়োর বড়াও (পামকিন সোয়া প্যানকেক) রয়েছে তালিকায়। যা কিনা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে যা দারুণ কার্যকর। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। হাড় মজবুত করে।
পাশাপাশি তালিকায় মজুত খেজুরের লাড্ডু, ঘোল, দইয়ের মতো পরিচিত খাবারও। শুধু নিরামিষ খাবার নয়, তালিকায় রয়েছে ‘মাংস রসম’–এর মতো আমিষ পদও। খাসির মাংস, পিপুল, গোলমরিচ, যব, বার্লি, আদার গুড়ো ব্যবহার করে এই মাংসের জুস তৈরি করা হয়। কোভিড পর্বে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে এটি দারুণ কার্যকর। অস্থিসন্ধির ব্যথা ও প্রদাহ কমায়।বইয়ের নাম ‘ট্রাডিশনাল ফুড রেসিপি ফ্রম আয়ুশ সিস্টেম অফ মেডিসিন’। ইতিমধ্যেই বইটির ই-ভার্সন জেলার আয়ুশ অফিসারদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। সুলোচনাদেবীর দাবি, ৪৮ পাতার বইটি ওষুধ নির্ভরতাও কমাবে।
[আরও পড়ুন: করোনা ভাইরাসকে খতম করতে দারুণ কার্যকরী অতিবেগুনি রশ্মি, দাবি গবেষকদের]
The post করোনা কালে আয়ুষ মন্ত্রকের ‘স্বদেশি বিপ্লব’, রোগব্যাধি দূরে রাখতে তৈরি ২৬ রকমের রেসিপি appeared first on Sangbad Pratidin.