সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের নির্লজ্জ নজির গড়েছে চিন। মঙ্গলবারই হংকংয়ের চল্লিশের বেশি গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীকে শোনানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও গণতন্ত্রকমীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, হংকংয়ের স্বশাসন শেষ করতে উদ্যত চিন। আর তাই ক্রমেই সেদেশের গণতন্ত্রের কণ্ঠে মজবুত হচ্ছে জিনপিং প্রশাসনের বজ্রমুষ্ঠি। আর এই সাজা ঘোষণার আগেই চার বছরে পরে দেখা গেল ধনকুবের তথা মিডিয়া টাইকুন জিমি লাইকে। অন্যদিকে প্রাক্তন ছাত্র নেতা জোশুয়া ওয়াংকেও দেখা গিয়েছে এদিন। তিনি চেঁচিয়ে বলছিলেন, ''আই লাভ হংকং।''
এদিন সাজা ঘোষণার সময় দেখা যায়, হংকংয়ের আদালতে অন্তত ৫০ মাসের সাজা পেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের। চার বছর আগে হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনে সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ দশ বছর করেছিল চিনই। সব মিলিয়ে এদিন সাজা শোনানো হয়েছে ২৪০ বছরের।
প্রসঙ্গত, হংকংয়ের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে মরিয়া চিন। বছরকয়েক আগে সেখানে পাস হয়ে যায় বিতর্কিত সংশোধিত নির্বাচনী বিল। এই বিতর্কিত বিলটির বিরোধিতায় সরব হয় আমেরিকা। হংকংবাসীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে বেজিং বলে অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন।
এহেন পরিস্থিতিতে এদিন চার বছর পরে দেখা মিলল জিমি লাইয়ের। বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বরাবরই বেজিংয়ের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সরব ‘Next Digital’ মিডিয়া সংস্থার কর্ণধার লাই। চিন-বিরোধী খবর প্রকাশের অভিযোগ তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জিমির সংস্থার সংবাদপত্র ‘অ্যাপল ডেইলি’ও। তার আগে এক সাক্ষাৎকারে লাই সাফ জানিয়ে দেন, হংকংয়ে থেকেই তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবেন। নয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাঁকে নিশানা করবে বেজিং বলে সেখানে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন লাই। সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। পরে ২০২২ সালে দোষী সাব্যস্ত হন। মাঝের দীর্ঘ সময়ে তাঁকে প্রকাশ্যে দেখাই যায়নি। লাইকে যাবজ্জীবন সাজাও শোনানো হতে পারে বলে মনে করা হলেও এদিন সাজা ঘোষণা করা হয়নি তাঁর।
এদিন প্রায় চার বছর পরে প্রকাশ্যে দেখা যায় তাঁকে। অন্যদিকে প্রাক্তন ছাত্র নেতা জোশুয়া ওয়াংকেও দেখা গিয়েছে এদিন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ''আই লাভ হংকং।'' তাঁকে শোনানো হয়েছে ৪ বছর ৮ মাসের সাজা। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, অনেকটাই ওজন ঝরে গিয়েছে তাঁর।