সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রতিপন্ন করতে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বিপাকে মায়ানমার। মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনার গণহত্যার ছবিকে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের কাজ বলে চালানোর চেষ্টা করে বার্মিজ সেনা। তবে বিষয়টি নজরে আসে রাষ্ট্রসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’র, তারপরই শুরু হয় সমালোচনা। অবশেষে চাপের মুখে নতিস্বীকার করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয় মায়ানমার সেনা।
[মৃত ‘হাক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর প্রতিষ্ঠাতা, স্বস্তির স্বাস ফেলল আমেরিকা]
কয়েকদিন আগে ‘মায়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড দ্য টাটমাডো: পার্ট ওয়ান’ নামের বইটিতে গণহত্যার দুটি ছবি প্রকাশ করা হয়। দাবি করা হয়, মায়ানমারে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের গণহত্যায় জড়িত রোহিঙ্গারা। দেশটির জনবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটাচ্ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা। ছবি দু’টি নাকি এই অভিযোগের সত্যতা তুলে ধরছে। তারপরই ঘটনার তদন্তে নাম রাষ্ট্রসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। জানা যায়, ছবি দুটি আসল। তবে ছবিতে দেখানো ঘটনাবলী আদৌ মায়ানমারের নয়। জানা যায়, প্রথম ছবিটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাক সেনার হাতে মৃত নিরীহ মানুষের। দ্বিতীয় ছবিটি, রোয়ান্ডার হাউতি শরণার্থীদের। ওই উদ্বাস্তুদের তানজানিয়া যাত্রাকে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রবেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান মৃতদেহের ঐতিহাসিক ছবিটিকে মায়ানমার সেনাবাহিনীর বইতে ১৯৪০-এর দশকে বৌদ্ধদের হত্যার ঘটনা বলে দাবি করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে রীতিমতো মুখ পুড়েছে সু কি সরকার ও বার্মিজ সেনার। তাই শেষমেশ ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে ক্ষমা চেয়ে নেওয়াকেই শ্রেয় মনে করেছে সেনা। তবে ক্ষমা চাইলেও বিতর্কিত বইটির বিক্রি বন্ধ করা হয়নি। ইয়াঙ্গনে একাধিক বইয়ের দোকানে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে বইটি। এদিকে অন্য একটি ঘটনায়, সোমবার কক্সবাজার জেলার টেকনাফের পাহাড় থেকে গলাকাটা অবস্থায় তিন রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শরণার্থীদের মধ্যে।
[শৌচালয় পরিষ্কারে প্রয়োজন অমুসলিম কর্মী! পাক সেনার বিজ্ঞাপন ঘিরে বিতর্ক]
The post রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রতিপন্ন করতে মিথ্যাচার, ক্ষমা চাইল বার্মিজ সেনা appeared first on Sangbad Pratidin.