সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কিছুটা সুর নরম করল মায়ানমার (Myanmar)। গত মঙ্গলবার নিরস্ত্র প্রতিবাদীদের উপর গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। যদিও সেই আশ্বাস কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘লাল ফাঁসে’ আটকে সংবাদমাধ্যম, এবার বিবিসি’র সম্প্রচার বন্ধ করল চিন]
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘মায়ানমার টাইমস’ সূত্রে খবর, মানবাধিকার রক্ষা সংক্রান্ত সিপিআরএইচ নামের একটি কমিটি গুলি কাণ্ডে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় এই কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, গণতন্ত্রকামীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করেছে তারা। এদিকে, এই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে বয়ে গিয়েছে সমালোচনার ঝড়। আমেরিকা, ব্রিটেন, ভারত-সহ একাধিক দেশ সু কি’র মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ফলে চাপের মুখে কিছুটা সুর নরম করেছে দেশটির সামরিক প্রশাসন। বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক শাসনে নিরপেক্ষ তদন্ত কার্যত অসম্ভব। সেনার নির্দেশ না পেলে মায়ানমারে আপাতত কোন কাজেই হাত দেওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে কউন্সিলর আং সান সু কি ও গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। এক বছরের জন্য দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। ফলে সামরিক শাসনে কণ্ঠরুদ্ধ হয়েছে গণতন্ত্রের। মায়ানমারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে অহিংস প্রতিবাদের অধিকার সবই কেড়ে নিয়েছে সামরিক জুন্টা। তারপর থেকেই রাজধানী নাইপিদাও ও ইয়াঙ্গন-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে গণবিক্ষোভ। প্রতিবাদের আগুন যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে তাই ফেসবুক, টুইটার-সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া সাইট বন্ধ করে দিয়েছে সামরিক প্রশাসন। নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। কিন্তু এতকিছুর পরও রাস্তায় নেমে সু কি’র মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে মানুষ। গত মঙ্গলবারও এমনই এক মিছিলে বিনা প্ররোচনায় জলকামান ও গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আঘাত পান ম্যাট থেট খাইন নামের ১৯ বছরের এক তরুণ। তাঁর দিদি হুংকার দিয়েছেন, সামরিক শাসন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।