সুকুমার সরকার, ঢাকা: শরণার্থী সমস্যার সমাধানের আশা জাগিয়ে বাংলাদেশে এল মায়ানমারের প্রতিনিধি দল। বুধবার সকাল দশটা নাগাদ নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছয় নাইপিদাওয়ের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এদিন একাধিক নৌকায় নাফ নদী পার হয়ে টেকনাফের চৌধুরীপাড়ার ট্রানজিট জেটিতে পৌঁছয় প্রতিনিধি দলটি। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মায়ানমারের বিদেশমন্ত্রকের মংডুর আঞ্চলিক পরিচালক অং মাইউ। টেকনাফে মায়ানমারের প্রতিনিধি দলকে অভ্যর্থনা জানান কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মহম্মদ সামসুদ্দৌজা।
বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মহম্মদ মিজানুর রহমান স্থানীয় সংবাদমাধ্যামে জানান, মায়ানমারের প্রতিনিধিরা টেকনাফে থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত ৪২৯ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর তথ্য খতিয়ে দেখবেন। একইসঙ্গে, রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া শিশুদের তথ্যও নথিভুক্ত করবেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘শুধু কি নমাজ পড়াবে আর মাদ্রাসা খুলবে’, মৌলবাদীদের কড়া বার্তা বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীর]
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় সূত্রে খবর, প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ (Bangladesh) আট লক্ষের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মায়ানমারের কাছে পাঠিয়েছে। ওই তালিকা থেকে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ১৪০ জনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ৭১১ জন রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মায়ানমারের সম্মতি মিললেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে আপত্তি ছিল। এবার মায়ানমারের প্রতিনিধি দলটি ওই ৪২৯ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাইয়ের জন্য টেকনাফে এসেছে।
উল্লেখ্য, মায়ানমার সেনাবাহিনীর হাত থেকে জীবন বাঁচাতে পাঁচ বছর আগে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তারও আগে এসেছিল চার লক্ষ। এদের ভিড়ে চলে আসে তস্কর রোহিঙ্গারাও। এর মধ্যে দু’লক্ষ শিশু জন্মগ্রহণ করায় এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লক্ষ। দিনেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ১১৫ টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ধর্ষণ মামলা হয়েছে শতাধিক। উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পেই একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাম্পগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খুনোখুনি, অপহরণ, লুটপাট স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে রূপ নিয়েছে।